বিশ্বনাথে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ : গুলির আওয়াজে পুরুষ শুন্য যে গ্রাম

বিশ্বনাথ সারাদেশ সিলেট
শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মৌলভীরগাঁও গ্রামে গত ২২সেপ্টেম্বর শুক্রবার নজির বিহীন সন্ত্রাসী ঘটনার পর কোন অস্ত্র উদ্ধার, আসামিদেরে গ্রেফতার না করায় গ্রামবাসিদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোন সময় এই গ্রামে হত্যাকান্ডসহ বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

আজ রবিবার পহেলা অক্টোবর দুপুর ১২টার বিশ^নাথ মডেল ও বিশ^নাথ প্রেসক্লাবে গ্রামবাসির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্কুল ছাত্র আরিফ হাসান। গ্রামবাসির বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে একটি সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করায় গ্রামটি পুরুষ শুন্য হয়ে পড়লেও অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসীরা বহাল তবিয়তে অবস্থান করছে।

লিখিত অভিযোগে বলা হয় গত ২২সেপ্টেম্বর রবিবার মৌলভীরগাঁও গ্রামের সাব্বির, সাইকুল, জাহেদুল, মাজেদুল, মানিক, খালেদ, সিরাজ ও সাজ্জাদের নেতৃত্বে প্রায় দুই আড়াই শতাধিক সন্ত্রসী বন্দুক পিস্তলসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র দিয়ে ফিল্মি স্টাইলে গ্রামে প্রবেশ করে ৩ভাগে বিভক্ত হয়ে মুহু মুহু গুলি ছুড়ে এক আতঙ্কের সৃস্টি করে শায়েস্তা মিয়া জয়নাল আবেদীন লায়েক মিয়াসহ ৪জনকে হত্যা করতে বাড়ি বাড়ি খুজছিল।

গুলির আওয়াজ শুনে গ্রামবাসি জড়ো হলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়া হয় এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসি লেবু মিয়ার বাড়ির রাস্তার নির্মানাধিন গেইট ভাংচুর শুরু করে সন্ত্রাসীরা। গ্রামের লোকজন একাধিকবার থানা পুলিশকে জানানো হলে প্রায় ৩/৪ঘন্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ইতিমধ্যে সন্ত্রাসীরা ২০/২৫রাউন গুলি ছুড়ে। ঘটনাস্থলে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য বলা হলে বিশ্বনাথ থানার ওসি গ্রামবাসিকে জানান, অভিযোগ না পেলে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবেনা। ফলে আসামিরা বেপরোয়া হয়ে গত ১০দিন ধরে সন্ধার পর গুলি ছুড়ে আতংকের সৃষ্টি হওয়ায় গ্রামটি পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে। মহিলা শিশুরা আতঙ্কে দিন যাপন করছেন। ঘটনার পর শনি ও রবিবারে সন্ধার পর সন্ত্রাসীরা পূণরায় গুলি ছুড়ে এবং গতকাল শনিবার থানার এসআই মোয়াজ্জেমের সামনেই লেবু মিয়া পক্ষের লোকজনকে আক্রমন করে।

গত ২২ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে সিলেট আদালতে একটি মামলা (৪৫/২৩ইং) দায়ের করলে এখন পর্যন্ত কোন অস্ত্র উদ্ধার বা আসামিদেরকে গ্রেফতার করা হয়নি। এ মামলার পর সন্ত্রাসীদের পক্ষে সাইকুল ইসলাম গ্রামের ৩০জনকে আসামি করে সম্পুন্ন মিথ্যা সাজানো মামলা দায়ের করে। এ মিথ্যা মামলা থেকে গ্রামবাসিকে অব্যাহতি, বাদির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন, আসামিদের গ্রেফতার এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২২সালের নভেম্বরে যুক্তরাজ্য প্রবাসি মিয়াজান আলী গ্রামবাসিকে নিয়ে এক বৈঠকে প্রবাসি লেবু মিয়া গংদের জমির উপর দিয়ে জামাল ও মানিকগংরা রাস্তার জন্য জায়গা দিতে অনুরোধ করলে লেবু মিয়া নিজের জমির উপর দিয়ে রাস্তা দেয়ার সম্মতি দেন। তখন লেবু মিয়ার জায়গায় একটি গেইট নির্মাণের কথা জানালে জামালগংদের কোন আপত্তি নেই বলে জানানো হয়।

কিন্তু গেইট নির্মাণের পর কতিপয় অসৎ ব্যক্তিদের প্ররোচনায় গেইটটি জোর পূর্বক ভেঙ্গে প্রবাসি লেবু মিয়াগংদের বাড়ি জমি দখলের জন্য মরিয়া উঠে জামালগংরা। থানায় একাধিক অভিযোগ করলে তৎকালিন বিশ^নাথ থানার ওসি গাজি আতাউর রহমান সরেজমিনে গেইটের স্থান পরিদর্শন করে লেবু মিয়ার কাগজপত্রে দেখা যায়, নির্মিত গেইটের চতুরদিকে তাদের নিজস্ব জমি রয়েছে এবং গেইটে কারো কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। এনিয়ে একাধিকবার থানায় বৈঠকের পর পুলিশের এজন উর্ধতন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে লিখিতভাবে গেইট নিয়ে কারো কোন আপত্তি নেই বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সাবেক ওসি গাজি আতাউর রহমান বদলি হওয়ার পরই সেই গেইটি ভেঙে দেয়া হয়। বর্তমানে এ গ্রামে যে কোন সময় খুন খারাবির মত ঘটনা ঘটতে পারে এবং গ্রামে থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপিসহ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দেলোওয়ার হোসেন, জাহারানা বেগম, সুজিনা বেগম, আম্বিয়া বেগম, পিয়ারা বেগম, হুসনা বেগম, আজিজুর রহমান, রাশিদা বেগম ও লিপি বেগম প্রমুখ।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *