নিজস্ব প্রতিবেদক : অপ্রিয় হলেও সত্য যে, বিশ্বনাথ উপজেলার (তেলিকোনা) এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার এডহক কমিটি, মহামান্য হাইকোর্ট-সুপ্রীম কোর্ট এবং মাদরাসা অধিদপ্তরের কোন নির্দেশ মানছে না। স্থানীয় প্রশাসনও রহস্যজনক কারনে এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছে না। ফলে একাধিকবার মাদরাসার অধ্যক্ষকে আটক ও লাঞ্চনা করে তাঁর সরকারি কাজ কর্মে বাঁধা প্রদান করা হচ্ছে। আজ রবিবার মাদরাসা অধিদপ্তরের একটি পত্র নিয়ে অধ্যক্ষ তাঁর সরকারি দায়িত্ব পালন করতে মাদারাসায় গেলে উগ্রপন্থী ক্ষতিপয় লোক তাঁকে সাংবাদিকদের সামনে মাদরাসায় ঢুকতে দেয়নি। এ ঘটনায় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা রোধে উভয় পক্ষকে দুরে সরিয়ে দেয়।
গত ২০ মার্চ মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইনকে চার মাসের বাধ্যতামূলক ছুটি দেখিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন এডহক কমিটির আহবায়ক নিজামুল ইসলাম। নোটিশের জবাব না দেয়ায় গত ২৬ মার্চ অধ্যক্ষকে মাদরাসায় আটকিয়ে সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান করে মাদরাসা তালাবদ্ধ দেয়া হয়। এক পর্যায়ে জেলা উপজেলা প্রশাসন আরেকটি পত্রের মাধ্যমে অধ্যক্ষ আবু তাহিরকে তাঁর পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে মখলিছুর রহমানকে অধ্যক্ষের দায়িত্বের নির্দেশ দেয়া হয়।
এ পত্রদুটি চ্যালেঞ্জ করে অধ্যক্ষ আবু তাহির মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন ১২৬/২০২৩ দায়ের করলে মহামান্য হাইকোর্ট প্রথমে পত্রদু’টি ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেন এবং পরবর্তীতে শুনানী শেষে অধ্যক্ষের অব্যাহতির আদেশ বাতিল ঘোষনা দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মখলিছুর রহমান হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের আবেদন করে আরেকটি মামলা ২৮/২০২৩ দায়ের করলে মহামান্য সুপ্রীমকোর্ট মখলিছুর রহমানের আবেদন বাতিল করে হাইকোর্টে আদেশ বহাল রাখেন। গত ২৮ আগষ্ট মাদরাসা অধিদপ্তর হাইকোর্টের নির্দেশনামতে অধ্যক্ষকে দায়িত্ব পালনে পত্র দেয়া হলে আজ তিনি মাদরায় গেয়ে তাঁকে জামাত শিবিরের উগ্রপন্থিরা মাদরাসায় ডুকতে দেননি বলে অভিযোগ করেন।
জানা যায়, মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইন একজন ফুলতলী সমর্থক ব্যক্তি। অপর পক্ষে মাদরাসার কমিটিতে জামাত শিবিরের উগ্রপন্থি লোক জড়িত। মাদরাটির প্রতিষ্টাকালীন সময় হতে জামাত শিরিরের লোকজন আধিপত বিস্তার করে আসছে। মাদরাসাটি একটি বাড়ির কবস্থান, প্রাথমিক স্কুল, মসজিদের অভ্যন্তরে অবস্থিত। প্রতি বছর রমজান মাসে এ মাদরাসায় রাতের বেলায় সিলেটের উগ্রপন্থিদের প্রশিক্ষণ চলে আসছিল। অধ্যক্ষ তাতে বাঁধা দেন এবং মাদরাসার একটি বিল্ডিং দুরবর্তি স্থানে খোলা জায়গায় নির্মানের প্রস্তাব করলে উগ্রপন্থিদের সাথে অধ্যক্ষের মতবিরুধ সৃষ্টি হয়। আজ রবিবার মাদরাসা অধিদপ্তরের আদেশ নিয়ে অধ্যক্ষ আবু তাহির মাদরাসায় গিয়ে নিজামুল ইসলাম ও তার সঙ্গিরা মাদরায় ঢুকতে না দিয়ে লাঞ্চিত করলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অধ্যক্ষকে রক্ষা করে।
অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, সরকার জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকলেও এখানে নানা ভাবে সেল্টার দেয়া হচ্ছে। আমি সরকার ও দেশ বিরুদী কার্যক্রমে বাঁধা দেয়ার আমাকে প্রাণে হত্যাসহ মাদরাসা থেকে বিতাড়িক করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত সহযোগীতা কামনা করছি।
এ ব্যাপারে বিশ^নাথ থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম জানান, মাদরাসার উভয়পক্ষকে থানার আসার জন্য বলেছি। বিষয়টি জেনে শুনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।