ডাক ডেক্স : বিশ্বনাথ উপজেলায় সরকারি ১ খতিয়ানভুক্ত খাস জমি ভুমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্ত প্রদানের সরকারি ঘোষনা থাকলেও ভুমি অফিসের দূনীতিবাজ কর্মকর্তাদের অর্থলোভের কারনে সেই খাস জমি প্রভাবশালি ও প্রবাসি এবং ধনাট্য ব্যক্তিরা ভোগ দখল করছেন। বিভিন্ন সময় অসহায় ভুমিহীনরা উর্ধতন মহলে প্রতিকার চেয়ে আবেদন নিবেদন করলেও কোন ফল পাওয়া যায়না। যে কারনে অনেক সময় খাস জমি নিয়ে ভুমিহীন ও প্রভাবশালিদের মধ্যে মারামারি হানাহনি ও খুন খারাবির মত ঘটনা ঘটে। এমনি এক ঘটনা বিশ্বনাথের ডাক ২৪ ডটকমের অনুসন্ধানে ধরা পড়েছে।
বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের পূর্ব সীমান্তবর্তী তিলকপুর গ্রাম থেকে দক্ষিণ দিকে ফুলচন্ডি, খাজাঞ্চি গাঁও পর্যন্ত সুরমা নদীর চর ভরাট হয়েছে। এখানে বিপুল পরিমান খাস জমি রয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, হাজারি গাঁও গ্রামের সুলতান আলী গং ভুমিহীন ব্যক্তিগন হাজারি গাঁও মৌজার ১নং খতিয়ানের ২১৫৭ নং দাগের চর ভরাট রকম ভুমি বন্দোবস্তের জন্য আবেদন করলে ১৯৮৫ সালের ৯ অক্টোবর সুলতান আলী গংদের নামে ৩০ শতক ভূমি একসনা বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়। এই ভুমি সুলতান আলীর উত্তরাধিকারিগণ দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে ভোগ দখল করে ফসলাদি উৎপাদনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কিন্তু তাদের দখলে থাকাবস্থায় প্রয়াগমহল তফসিল অফিসের দূনীতিবাজ কর্মকর্তা অতিগোপনে হাজারি গাঁও গ্রামের মৃত হরমুজ আলীর পুত্র সৌদি আরব প্রবাসি জমির আলীর নামে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদান করেন। বিষয়টি কিছু দিন পূর্বে লোক মুখে জানাজানি হলে মৃত সুলতান আলীর পুত্র ইসলাম উদ্দিন গং গত ২৩ জুন ২০১৯ইং বন্দোবস্ত বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগটি রিপোর্ট প্রদানের জন্য প্রয়াগ মহল তফসিল অফিসে গেলে ইসলাম উদ্দিন প্রয়াগ মহল তফসিলদারের সাথে দেখা করেন। তফসিলদার আব্দুস শুকুর অভিযোগের কথা শুনে ক্ষীপ্ত ভাবে জানান, ‘খাস জমি ভুমিহীনরা পাবে, এমন আইন কানুন আছে বলে তার জানা নেই, ধনী হউক গরিব হউক যার নামে বন্দোবস্ত দিয়েছি তার নামেই রিপোর্ট দেব, আপনি ঘোরাফেরা করে কোন লাভ নেই। এতে হতাশ হয়ে পড়েন ইসলাম উদ্দিন।
সরেজমিনে হাজারি গাঁও গ্রাম ঘুরে জানাযায়, জমির আলী একজন সৌদি আরব প্রবাসি এবং ধনে জনে প্রভাবশালি ব্যক্তি হন। স্থানীয় লোকজেনর অভিযোগ বিপুল পরিমান টাকা ঘুষ দিয়ে জমির আলী সুলতান আলীর জমি গোপনে লিজ নিয়েছেন। সরজমিনে দখলদার না দেখে শুধু মাত্র টাকার কারনে ধনী ব্যক্তি জমির আলীকে এই ভূমি প্রদান করা হয়েছে। ইসলাম উদ্দিন জানান, বাপ দাদার আমল থেকে এই জমি আমরা গ্রামের মানুষের জ্ঞাতসারে ভোগ দখল করে আসছি, এবারো জমিতে ধান রোপনের জন্য জমি চাষ করছি। আমাদের প্রাণ যাবে তবুও আমরা এ জমি ছাড়ব না। এ নিয়ে যেকোন সময় খুন খারাবির মত ঘটনা ঘটতে পারে। ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসার সময় রাস্তায় বেশ কয়েকজন কৃষককে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল খাস জমি ভুমিহীনরা পায় একথা কি আপনারা জানেন? উত্তরে কয়েকজন কৃষক রসিকতা করে বলেছেন, টাকা যার খাস জমি তার। ভূমিহীনরা মরে গেলেও বিনা টাকায় খাস জমি পায়না। ঘুষ ছাড়া প্রয়াগ মহল তফসিল অফিসের একটি কাগজ ও নড়ে না।
এ ব্যাপারে প্রয়াগ মহল ভূমি অফিসের তফসিলদার আব্দুস শুকুর জানান, খাস জমি ভূমিহীনদের দেয়ার নিয়ম রয়েছে। হাজারি গাঁও মৌজায় প্রবাসিকে কিভাবে ভূমি বন্দোবস্ত দিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দেইনি অন্য একজন দিয়েছেন। তিনি জেলা প্রশাসক বরাবরে ভূমিহীন ইসলাম উদ্দিনের অভিযোগ পেয়েছেন স্বীকার করে বলেন, তদন্ত করে রিপোর্ট দেব, প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।