স্টাফ রির্পোটার: বিশ্বনাথ উপজেলার চৈতননগর গ্রামের ছরকুম আলী দয়াল হত্যা মামলায় ২৫জনকে বাদ দিয়ে ৫জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেছে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। এসআই ফজলুল হক এই চার্জশীট দাখিল করেন। চার্জশীটের বিরুদ্ধে মামলার বাদী নিহত ছরকুম আলী দয়ালের ভাতিজা আহমদ আলী গত ৩ মে আদালতে নারাজী দাখিল করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী আহমদ আলী ও তার আইনজীবি এএসএম গফুর।
চলতি বছর ২৮ জানুয়ারী চাউলধনী হাওরে ছরকুম আলী দয়ালের নিজস্ব ভূমিতে জোরপূর্বক সাইফুল ও তার বাহিনী সেচ দিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করলে ছরকুম আলী দয়াল ও তার আত্মীয় স্বজনরা তাতে বাধা দেন। এতে প্রতিপক্ষ দয়ালকে পিঠিয়ে আহত করলে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ২ ফেব্রুয়ারী আহমদ আলী যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুলকে প্রধান আসামী করেন ৩০জনের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-০৩, তাং-০২-০২-২০২১ইং)। মামলা দায়েরের পর তদন্তভার গ্রহণ করেন এসআই ফজলু। নারাজীতে বাদী আহমদ আলী অভিযোগ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা তার স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য যথাযথ ভাবে নিজ হাতে লিপিবদ্ধ না করে আসামীদের রক্ষার জন্য মনগড়া সাক্ষী লিপিবদ্ধ করেন। নারাজীতে আরও বলা হয়, ঘটনারস্থলে পুলিশ যে চারজনকে গ্রেফতার করেছিল, তাদেরকে আদালতে ফরোয়াডিং রির্পোটে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজেই বলেছেন, ‘ আসামীগণ উক্ত ঘটনার সহিত জড়িত মর্মে স্বাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাইতেছে’। তদন্তকারী কর্মকর্তা আরেক প্রতিবেদনে ভিকটিম ছরকুম আলী দয়াল আসামীদের ধাক্কাধাক্কিতে মাটিতে পড়ে চটপট করতে থাকেন বলে মন্তব্য করেন। তিনি মামলাটি শুনানীক্রমে নারাজী গ্রহণঃকরত অধিকতর তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। এই মামলার গ্রেফতারকৃত আসামী দিলোয়ার, আশরাফ উদ্দিন, আছকির ও মারজান জামিনে মুক্ত আছেন। আব্দুল মালিক নামে একজন জেলহাজতে রয়েছে। মামলা দায়েরের পর ৯জন আসামী মহামান্য হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে নিম্ন আদালতে আর্ত্মসমপনের আবেদন করে পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন। তারা এখনও আদালতে হাজির হয়নি এবং গ্রেফতারী পরোয়ানাও বহাল রয়েছে। মূল আসামী সাইফুল ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীদের রক্ষার জন্য তড়িগড়ি করে ২৫জনকে বাধ দিয়ে আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে বলে বাদী আহমদ আলী অভিযোগ করেন।
এদিকে, গত ১ মে শনিবার স্কুল ছাত্র সুমেল হত্যাকান্ডের পর সিলেটের পুলিশ সুপার রাতেই সরেজমিনে এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে তিনি এলাকাবাসীর নিকট থেকে ছরকুম আলী দয়াল হত্যাকান্ডের ঘটনা জানতে পারেন। এলাকাবাসী পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ করে বলেন, দয়াল হত্যা মামলা থেকে সাইফুল অব্যাহতি পেয়েই সুমেলসহ ৫জনকে গুলিবিদ্ধ করে। পরদিন রবিবার দয়াল হত্যা মামলার বাদী আহমদ আলী সিলেটের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে দেখা করেন। তখন পুলিশ সুপার আদালতের মাধ্যমে মামলাটি পুণঃরায় তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হলে তিনি আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাষ দেন এবং সাইফুল বাহিনীর বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থানের কথা জানান। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দয়াল হত্যা মামলার বাদী আহমদ আলী। আহমদ আলীর দায়েরী নারাজী শুনানীর অপেক্ষায় রয়েছে। এদিকে পলাতক আসামীরা জামিন নেয়ার জন্য নানা কৌশলও অবলম্বন করছে।
বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মূসা জানান, দয়াল হত্যা মামলার কতেক আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা থানা রয়েছে।