নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বনাথ উপজেলার চৈতননগর গ্রামের চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা মামলার ১৪ আসামীকে জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নিদের্শ দিয়েছেন আদালত। আজ ২৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সিলেটের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কাউছার আহমেদের আদালতে এই ১৪জন আসামী ২৮দিন জামিনে থাকা পর মহামান্য হাইকোর্টের নিদের্শনা মতে হাজির হয়েছিলেন। আসামীরা হচ্ছেন লুৎফুর রহমান, ময়ুর মিয়া, ইলিয়াছ আলী, মামুনুর রশীদ, দিলাফর আলী, ওয়াহিদ, জামাল আহমদ, দিলোয়ার হোসেন, ফরিদ মিয়া, আকবর আলী, আজাদ মিয়া, মুক্তার আলী, আব্দুর রকিব, আঙ্গুর আলী। আদালতে জামিন শুনানীকালে আসামী পক্ষের আইনজীবি তাদের জামিনের জোর দাবী করলে বাদী পক্ষের আইনজীবিরা বিরাধিতা করে বলেন, সুমেল হত্যা মামলাটি চাঞ্চল্যকর একটি মামলা। এই কিশোরকে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
শুনানী শেষে আদালত আসামীদের জেলহাজতে প্রেরণের নিদের্শ দেন। আসামী শাহিন অন্য মামলায় জেলহাজতে থাকায় আজ আদালতে হাজির হতে পারেনি। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সুমেল হত্যা মামলার বাদী ইব্রাহিম আলী সিজিল। বাদী পক্ষে ছিলেন এডভোকেট রেজাউল করীম, এএসএম গফুর ও মঞ্জুর ইলাহি সামী। আসামী পক্ষে ছিলেন এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন।
গত ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর সুমেল হত্যা মামলার মহামান্য হাইকোর্টের দ্বৈত্য বেঞ্চের বিচারপতি জাহাঙ্গীর আলম ও আতাউর রহমানের আদালতে পৃথক পৃথক ভাবে আগাম জামিনের আবেদন করলে ২০জন আসামীর মধ্যে আসামী সাইফুল, সদরুল, নজরুল, আছকির, সিরাজ কে ৪ সপ্তাহের মধ্যে অর্থাৎ ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার নিদের্শ দিয়ে ছিলেন। কিন্তু আসামীরা হাইকোর্টের নিদের্শ অবজ্ঞা করে যথা সময়ে নিম্ন আদালতে হাজির হয়নি। ফলে গত 21 অক্টোবর মামলার প্রধান আসামী সাইফুলকে বাদী পক্ষ ঢাকার রমনা থানাধীন সেগুন বাগিছার একটি ১১তলা বিল্ডিং থেকে আটক করে। সাইফুল আটকের জনরোষের আশংকায় সদরুল, নজরুল, আছকির, সিরাজ এই চার নিম্ন আদালতে হাজির হলে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। আসামী জলিল ও শাহিন বেশ কয়েক মাস ধরে জেলহাজতে রয়েছেন। বর্তমানে সুমেল হত্যা মামলা ২২জন আসামী জেলহাজতে রয়েছেন।
ইতিপূর্বে আসামী পারভেজ, আশিক উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, ইলিয়াছ আলী, আব্দুন নুর, জয়নাল আবেদিন, ফিরোজ আলী, রেদওয়ান, জাবেদ ও মখলিছ আলী হাইকোর্ট থেকে জামিন লাভ করেন।
উল্লেখ্য যে, গত ১লা মে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও চাউলধনী হাওরের সাবলীজ গ্রহিতা সাইফুল তার বাহিনী নিয়ে স্কুলছাত্র সুমেলকে বন্দুক ও পিস্তল দিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এসময় সুমেলের বাবা চাচাসহ আরও চারজন গুলিবিদ্ধ হন। সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী বিশ্বনাথ থানা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার খবর দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পরলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা মানববন্ধন করে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন এবং চাউলধনী হাওরের ৩০/৩৫টি গ্রামের লোকজন সিলেট ও বিশ্বনাথে কয়েক দফা খুনিদের ফাঁসি ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবীতে মিছিল সমাবেশ করেন। সাইফুলকে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ঢাকা থেকে আটক করে নিয়ে আসার পর দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলেও এখনও শুনানী হয়নি।