স্টাফ রির্পোটার: বিশ্বনাথ থানার চাউলধনী হাওর এলাকার চাঞ্চল্যকর কৃষক ছরকুম আলী দয়াল ও স্কুলছাত্র সুমেল হত্যাকান্ডের আসামীদের গ্রেফতার না করে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছিল পুলিশ। শুধু তাই নয়, সুমেল হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থলের আলামত নষ্ট করে আসামীদের রক্ষার সকল চেষ্টা করেছিল বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। এমনকি চাউলধনী হাওর রক্ষা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে সাজানো ও মিথ্যা মামলা দায়ের করে জেলহাজাতে পাঠানো হয়েছিল। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্বনাথ থানার তৎকালিন ওসি শামীম মূসা ও এসআই ফজলুকে ক্লোজড করা হয়। পরবর্তীতে এসআই ফজলুর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। এলাকাবাসীর এসব অভিযোগ সরজমিনে এসে তদন্ত করেন গোলাপগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী।
তদন্তের পর এসআই ফজলুর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হলে ইতিমধ্যে তিনদফা স্বাক্ষীপ্রমাণ গ্রহণ করা হয়েছে। সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফজু আফজাল এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। ১০ আগষ্ট মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাহফজু আফজালের কার্যালয়ে তৃতীয় দফা স্বাক্ষীপ্রমাণ গ্রহণ করা হয়।
দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন ধন মিয়া, কৃষক দয়াল হত্যা মামলার বাদী আহমদ আলী, ইসলাম উদ্দিন, আব্দুল করিম, বাহার মিয়া স্বাক্ষীপ্রদান করেন। ইতিপূর্বে সুমেল হত্যা মামলার বাদী ইব্রাহিম আলী সিজিল, মানিক মিয়া, মনির উদ্দিন, সালেহ আহমদ, নজির উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, আফজল হোসেনও স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। এসময় এসআই ফজলু তাদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে জেরা করেন। স্বাক্ষীগণ তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানান, ডাবল মার্ডারের পর এসআই ফজলু আসামীদের গ্রেফতার না করে তাদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন এবং থানায় ও এলাকায় আসামীদের নিয়ে উঠাবসা করেন। সুমেল হত্যাকান্ডের পর ঘটনাস্থলে রক্তমাখা আলামত ওসি শামীম মূসার নির্দেশে কোদাল দিয়ে চেচে নষ্ট করেন। হত্যাকারী সাইফুলের বন্দুক জব্দ করার জন্য লিখিত ও মৌখিক ভাবে জানালেও বন্দুক জব্দ না করায় সুমেলকে হত্যা করা হয় এবং আসামীদের গ্রেফতার না করায় দীর্ঘদিন যাবত সরকারের বিভিন্ন বাহিনী খুনিদের গ্রেফতার করতে পারেননি। দয়াল হত্যায় একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করা হলেও ওসি শামীম মূসা টেলিফোন করে ছাড়িয়ে দেন। দারোগার বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য প্রমাণের তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন স্বাক্ষী ইব্রাহিম আলী সিজিল ও আনোয়ার হোসেন ধন মিয়া।
উল্লেখ্য যে, গত ২৮ জানুয়ারী ছরকুম আলী দয়াল ও ১ লা মে স্কুলছাত্র সুমেলকে খুন করা হয়। ঘটনার পর থেকেই বিশ্বনাথ থানার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন এলাকাবাসী।