বিশ্বনাথে ইয়াবা সম্রাট তবারকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা : রিমান্ড মঞ্জুর

Uncategorized
শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোটার : সিলেট গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ইয়াবা স¤্রাট তবারক সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। (মামলা নং-১২, তারিখ ১৪ মার্চ ২০২০ইং)। ধারা ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ৩৬ (১) এর ৯ (খ)/৩৬(১)এর১০ (ক)/৪১। মামলার বাদি হচ্ছেন, জেলা গোয়েন্দা শাখার এস আই ইমরুজ তারেক। গ্রেফতারকৃত আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত আসামি তবারক ও ওয়াহিদ মিয়ার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপর দুই আসামি সাগর হাওলাদার ও ইমন জমাদ্দারকে জেল গেইটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
ইয়াবা স¤্রাট তবারক গ্রেফতারের পর এলাকায় দারুণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দিন মজুর মৃত আলকাছ আলীর পুত্র তবারক আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার কাহিনী কেউ কেউ জানলেও সে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত এমন ঘটনা শুনে অনেকেই হতবাক হয়ে পড়েছেন। যে কারনে সমগ্র উপজেলায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। তবারকের ইয়াবা বহনে যারা জড়িত ছিল তারা এখন গা ঢাকা দিয়েছে। রবিবার দু’একজন আদালতে এসে আসামি হয়েছেন কিনা তা জানার জন্য ঘোরফেরা করতে দেখা গেছে।
গত ১৩ মার্চ দিবাগত রাতে ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা মূল্যের ১ হাজার ৮০ পিছ ইয়াবা দুইটি মোবাইল ও ৭টি সিমকার্ড সহ গ্রেফতার করা হয় তবারক সহ ৪জনকে। তিনজন ডিবি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। মামলায় আসামিরা হচ্ছেন, উপজেলার পাটাকইন গ্রামের মৃত আলকাছ আলীর পুত্র তবারক আলী, মনোহর পুর গ্রামের ইউসুফ আলীর পুত্র ওয়াহিদ মিয়া, শিমুলতলা গ্রামের ফজর আলীর পুত্র দুলু, জকিগঞ্জ উপজেলার উত্তর মাদারখাল গ্রামের মদরিস আলীর পুত্র শাহাব উদ্দিন মেম্বার, একই উপজেলার ঘিগালি গ্রামের মৃত আশিদ আলীর পুত্র হারিস উদ্দিন উরফে হারুছ, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র সাগর হাওলাদার, একই উপজেলার বড়পাশা গ্রামের ফিরোজ জমাদারের পুত্র ইমন জমাদ্দার। এর মধ্যে ৩জন পালিয়ে যায়। এজাহারে তবারকের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা ও ২টি জিডির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ৫ ফেব্রæয়ারি ঢাকাগামি হানিফ পরিবহনে একটি বাসে ৬১ হাজার পিছ ইয়াবাসহ নাহিদা বেগম ও শাহিনা খাতুন নামে দুই মহিলা ইয়াবা ব্যবসায়িকে হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা তবারক আলী ও তার স্ত্রী সাবিনা বেগমের ইয়াবা বহন করে নিয়ে বিক্রি করছে বলে জানায়। এ ঘটনার পর থেকে তবারকের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকলেও তার মাদক বাহিনীর মাধ্যমে পাইকারি ও খুচরা মাদকের কারবার চলছিল। অবশেষে তবারককে ১৩ মার্চ দিবাগত রাতে চানশীর কাপন এলাকায় তার নির্মানাধীন দালান থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। তবারক ইয়াবা ব্যবসায়ি নয় এবং সে একজন সমাজ সেবক হিসেবে পুলিশ সুপারের নিকট তার বাহিনী আবেদনও করেছিল। এই আবেদনে স্বাক্ষর নিতে তবারকের কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়। স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি আবেদনে সুপারিশ করতে বড় অঙ্কের টাকাও গ্রহন করেন। স্থানীয় ও বিভিন্ন সুত্রমতে তবারকের স্ত্রী এলাকার কতিপয় বেকার যুবকদের দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ইয়াবা বহন করে এনে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করাত। এক পর্যায়ে চশমা পরা সুন্দর এক যুবকের সাথে তবারকের স্ত্রী সাবিনার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। এতে অন্য যুবকরা ক্ষীপ্ত হয়ে ইয়াবা গাজার সাথে তবারক ও তার স্ত্রী জড়িত থাকার বিষয়টি জনসমক্ষে কৌশলে প্রচার করতে থাকে।
আরো জানা যায়, গত ঈদুল আজহার সময় গরুর চালান কেনার নামে তবারক যশোর থেকে এক কোটি টাকার ইয়াবা কেনার জন্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে ছিল। কিন্তু সেই এক কোটি টাকা কিংবা ইয়াবা ফেরত পায়নি। বেশ কিছুদিন পূর্বে সরকারের একটি সংস্থা কদমতলী থেকে সিলেট ক্রীন ব্রিজের সামনে তবারকের স্ত্রী সাবিনাকে কার সহ আটক করেছিল। সাবিনা বিষয়টি বুঝতে পেরে ইয়াবার ব্যাগটি একটি বাসের নিচে ফেলে দেয়। কিন্তু আইন শৃংখলা বাহিনী তাকে তল্লাসি করে ভ্যানেটি ব্যাগে নগদ ৩৫ লাখ টাকা পায়। তখন সাবিনা এই সংস্থার লোকজনের সাথে খুব খারাফ আচরণ করেছিল। কিন্তু ইয়াবার ব্যাগ না পাওয়ায় সেসময় তাকে গ্রেফতার করা সম্বভ হয়নি। ইয়াবা ব্যবসা করে হাজার কোটি টাকার মালিক তবারক আলীর গাড়ি বাড়ি দোকান সহ নগদ টাকার এখন কি অবস্থা হবে, এ নিয়ে তার ভদ্রবেশি শুভাকাংখিরা খুবই চিন্তিত রয়েছে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *