ডেক্স রিপোর্ট : বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্ণীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের মহা পরিদর্শক (আইজিপি) বরার অভিযোগ দিয়েছেন মোহাব্বত শেখ নামের এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী। তিনি উপজেলার দশপাইকা গ্রামের বাসিন্দা এবং যুক্তরাজ্য নরউইচ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। গত মঙ্গলবার বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ এনে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবরে অভিযোগ দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেটের পুলিশ সুপার ও বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জকে ওই অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিযোগ দাখিলকারী প্রবাসীর চাচাতো ভাই শফিক আহমদ পিয়ার।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৩অক্টোবর প্রবাসী মোহাব্বত শেখ ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইবুনাল আদালতে সেচ্ছাসেবকলীগ নামধারী নেতা মো: রফিক আলী ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫(১)ক/২৬(১)/২৯/৩১ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন, (পিটিশন মামলা নং ৩৪৪/১৯)। সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা দায়েরের পর এই মামলাটি তদন্তের জন্য বিজ্ঞ আদালতের বিচারক বিশ্বনাথ থানা পুলিশকে পাঠান এবং ২৪/১০/২০১৯ইং তারিখে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী। কিন্তু তিনি তদন্তের নামে কেবলমাত্র কালক্ষেপন করেছেন এমনকি দীর্ঘ প্রায় ৪মাস অতিবাহিত হলেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (রমা প্রসাদ চক্রবর্তি) এখন পর্যন্ত মামলার কোন স্বাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেননি। বরং গত ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর বিজ্ঞ আদালতের নিকট মামলার অভিযুক্ত মো: রফিক আলীর ফেসবুক আইডিটি পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য সিআইডি’র সাইবার ক্রাইম এন্ড ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষাপূর্বক মতামত প্রদানের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু মামলার আরজিতে অভিযুক্ত প্রধান আসামি মো: রফিক আলীর ফেসবুক আইডির লিংক https;//www.facebook.com/ridoy.amar.14 এই আইডিটি জব্দ না করিয়া আসামি রফিক আলীর সাথে আতাঁত করিয়া বড় অংকের টাকার বিনিময়ে মনগড়া অন্য একটি লিংক https;//www.facebook.com/rafiqali.a.ali পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করিয়া বিজ্ঞ আদালতের বিচারকের অগোচরে জেনেশুনে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। বিষয়টি মোহাববত শেখ তার আইনজীবীর মাধ্যমে জেনে ২০২০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মামলার আরজিতে উল্লেখিত URL এর ভিত্তিতে সঠিক প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞ আদালতের বিচারক আরজিতে উল্লেখিত অভিযুক্ত মো: রফিক আলীর সঠিক ইউআরএল যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরীক্ষা নিরিক্ষা পূর্বক আগামি ১৬ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তিকে নির্দেশ প্রদান করেন, (স্মারক নং ২১২/২০)।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সিলেট জেলা প্রেসক্লাব ও সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবে সাবেক শিবির ক্যাডার ও বর্তমান নামধারী সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা অস্ত্রবাজ রফিক আলীর নিকট থেকে অস্ত্র উদ্ধারের নিমিত্তে তার বিরুদ্ধে সংবাদ-সম্মেলন করেছেন তারই গ্রামের নিরিহ লোকজন। যেহেতু গ্রামবাসী রফিক আলীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন সেহেতু রফিক আলী একজন চিহ্নিত অপরাধী ও মামলাবাজ। এমতাবস্থায় তার মামলার সঠিক তদন্ত হবেনা বলে তিনি শতভাগ নিশ্চিত। কাজেই সন্ত্রাসীদের মদদদাতা, ঘুষখোর পুলিশ কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তি ও মামলাবাজ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মো: রফিক আলীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানানো হয়।
অনুলিপি পাওয়ার সত্যতা জানালেও এ প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম মুসা।তবে, অভিযুক্ত ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবির্ত বলেছেন, ঘুষ-দুর্নীতির বিষয় নয়, মামলাটি একটি জটিল মামলা। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে সিআইডির সাইবার ক্রাইম এন্ড ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষার করার অনুমতি লাগে, যে কারণে প্রতিবেদন পাঠাতে বিলম্ব হচ্ছে। আর আসামির সঙ্গে সখ্যতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোন আসামি যদি আদালত থেকে জামিন নেয়, তাহলে সে সব জায়গায় বিচরণ করতে পারে।