ডেক্স রিপোর্ট : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়েনের তেলিকোনা এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা জামায়াত-শিবির মুক্ত রাখতে এলাকাবাসি মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচেতন নাগরিক বৃন্দের ব্যানারে রাজাগঞ্জ বাজারে এ বানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
বক্তরা বলেন, মাদ্রাসা ক্যাম্পাস জামাত-শিবির মুক্ত ও তাদের মদদদাতাদের গ্রেপ্তার, বহিরাগতদের অস্ফালন বন্ধ এবং সরকারের বরাদ্দকৃত নতুন ভবন বিধি মোতাবেক ৮০শতাংশ ভূমিতে মাদ্রাসা স্থাপনের দাবীতে সিলেটের বিশ্বনাথে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের তেলিকোনা গ্রামে এলাহাবাদ আলিম মাদ্রাসার দক্ষিণে সড়কের পাশের্‘এলাকার সচেতন নাগরিকবৃন্দ ও এলাকাবাসী এবং সাবেক ও বর্তমান ছাত্ররা এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের নিজস্বতা রাখতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইন’র বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন। যাহা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। তেলিকোনা এলাহাবাদ মাদ্রাসাটি জামাত-শিবিরের দখলে রয়েছে। মাদ্রসার সহকারী অধ্যাপকের নেতৃত্বে মাদ্রাসায় সরকার বিরোধী বৈঠকসহ ইত্তেহাদুল কুররা নামে তাদের সংগঠনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাই, জামাত-শিবিরদের দখলে থাকা মাদ্রাসা ক্যাম্পাস দখল মুক্ত করে তাদের মদদদাতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং বহিরাগতদের অস্পালন বন্ধ করতে হবে।
তারা আরো বলেন, বর্তমান মাদ্রাসাটি একটি নদীর পাড়ে রয়েছে। যার দরুন মাদ্রাসার নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বর্তমান ভূমিতে সম্ভব নয়। কারণ উল্লেখিত এই নদীর পাড় থেকে ষাট ফুট দুরে মাদ্রাসা নির্মাণ করতে হবে। কিন্তু মাত্র ১১ শতকের সামান্য ভূমিতে মাদ্রাসা ভবন হবেনা। তাই সরকারের বরাদ্দকৃত ভবন ৮০ শতক জায়গায় মাদ্রাসার নতুন ভবন নির্মাণ করার দাবী জানান বক্তারা।
আওয়ামীলীগ নেতা হাজী আবুল হুসেনের সভাপতিত্বে ও খাজাঞ্চী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহ মুজিবুর রহমানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মাদরাসার সাবেক ছাত্র মাওলানা হাবিবুর রহমান সুজন, হাফিজ মাওলানা শাহিনুল ইসলাম, আল ইসলাহ নেতা হাফিজ শওকত আলী, তালামিয নেতা মাওলানা জামাল আহমদ, হাফিজ সাইদুর রহমান ও শাহ আলম সজীব।
সময় উপস্থিত ছিলেন, ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুন নূর, প্রবীন মুরব্বি ইসাদ আলী, কছির আলী আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল মতিন, ওয়াহাব আলী, দুলাল আহমদ কান্দিগ্রাম, মাওলানা নিজাম উদ্দীন, মাওলানা নাজির মিয়া ,হাফিজ তাজ উদ্দীন, হাফিজ আব্দুলাহ আল মামুন, হাফিজ আব্দুল বাসিত, হাফিজ আবুল লেইস, তেলিকোনা গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বি দিলওয়ার হুসেন, সফিক আহমদ, হাজী আব্দুল মোক্তাদির, মো নূর বক্স, হাফিজ আফতাব, খাজাঞ্চি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি, এনামুল হক বিজয়, আব্দুল মুনিম তারেক। এলাকার অন্যান্যদের মধ্যে ছোয়াব উল্লাহ, হারিস উল্লাহ, ফখর উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, আছাব আলী, আলহাজ্ব আশিকুর রহমান, আর্শদ আলী নুমান, আলা উদ্দিন, জমসর আলি, তেরা মিয়া, মনোওয়ার হুসেন, নাজমুল ইসলাম পারেল, আলী আহমদ শামিম প্রমূখ।
প্রসঙ্গ, বেশ কিছুদিন ধরে মাদরাসার একটি ভবন নির্মানের জায়গা নিয়ে মাদরাসায় জটিলতা সৃষ্টি হয়। ১৯৭০ সালে এলাকাবাসির সহযোগীতায় মাদরাসাটি প্রতিষ্টিত হয়। কিন্তু মাদরাসাটি এক পর্যায়ে একটি জামাত শিবির পরিবারের দখলে চলে যায়। অভিযোগ রয়েছে, রাতের বেলা সিলেট অঞ্চলের জামাত শিবিরের কর্মীদের এখানে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বিদেশ থেকেও অর্থের যোগান দেয়া হয়। বিষয়টি এলাবাসি শিক্ষামন্ত্রী পুলিশ প্রশাসন সহ অভিযোগ দায়ের করলে একটি গোষ্টি অধ্যক্ষকে দায়ী করে তাকে নানা ভাবে হয়রানি শুরু করে। অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইন আল্লামা ফুলতলীর (র.) অনুসারি এবং বিশ্বনাথ উপজেলা মিয়তুল মোদারেসিনের সভাপতি এবং আনজুমানে আল ইসরাহ’র কেন্দ্রীয় সদস্য। মাদরাসায় বর্তমানে মাত্র ১১ শতক ভুমি রয়েছে। এই ভুমিতে সরকারি বিধান মতে নতুন ভবন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই অধ্যক্ষ সরকারি বিধান মতে ৮০ শতক ভুমির উপর মাদরাসা স্থানান্তরের প্রস্তাব করলে তার উপর ক্ষীপ্ত হয়ে যান প্রতিপক্ষের লোক জন। তার বিরুদ্ধেও বিভিন্ন দফতরে সাজানো অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রশাসনের ক্ষতিপয় কর্মকর্তা রহস্যজনক কারনে জামাত শিবিরদের কৌশলে সহায়তা করছেন বলে স্থানীয় জনসাধারনের অভিযোগ। নিরপেক্ষভাবে একটি তদন্ত কমিটি গঠন পূর্বক এই মাদরাসাটি ধবংসের হাত থেকে রক্ষা করা এবং দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এখন একান্ত জরুরী।