বিদেশে থেকে আদালতে সশরীরে হাজিরা দেন আসামি

অপরাধ চট্টগ্রাম
শেয়ার করুন

অনলাইন ডেস্ক :: আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর কথা যে আসামির, তিনি আসলে থাকেন সৌদিআরবে। শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনা সত্য। পাসপোর্ট আর ভ্রমণ-সংক্রান্ত তথ্য স্পষ্ট করছে, সাইফুল ইসলাম সানি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে বসবাস করছেন। অথচ চট্টগ্রাম আদালতের রেকর্ড বলছে, চোরাই পণ্য কেনাবেচার মামলায় এই আসামি আদালতে সশরীরে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন।

প্রশ্ন উঠছে তাহলে কে হাজির হয়েছেন আদালতে? আদালতপাড়ায় এখন একটাই আলোচনার বিষয় ভুয়া হাজিরা।

চট্টগ্রামের পাথরঘাটার বাসিন্দা মো: ইউসুফ আলীর পুত্র সাইফুল ইসলাম সানি (২২)।

‎২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নতুন পাসপোর্ট হাতে পান এবং ওই বছরের আগস্টে চট্টগ্রাম থেকে ওমান হয়ে সৌদি আরব যান এবং রিয়াদের এক প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন তিনি।

‎তার নামে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের এজাহারে বলা হয়, সানি ও নকিব মোস্তফা চোরাই মালপত্র কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত। তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের মে মাসে অভিযোগপত্র জমা পড়ে। আদালত অভিযোগ গঠন করে ধারা ৪১১-এর অধীনে বিচার শুরু করেন, যা সর্বোচ্চ তিন বছরের সাজাযোগ্য অপরাধ।

আদালতের নথি বলছে, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন সানি। সেপ্টেম্বর, ডিসেম্বর ও চলতি বছরের একাধিক তারিখে তাকে হাজির দেখানো হয়েছে। অথচ ভ্রমণ নথি প্রমাণ করছে, তিনি তখনো সৌদি আরবেই ছিলেন।

‎বাদীপক্ষের অভিযোগ, আসলে সানির ছোট ভাই তাহসান ইসলাম সোহাম আদালতে গিয়ে বড় ভাইয়ের ছদ্মবেশে হাজির হচ্ছেন।

‎বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, সানি বিদেশে থাকা সত্ত্বেও আদালতে হাজির দেখানো হচ্ছে। আদালত এরই মধ্যে তাকে ২০২৬ সালের ৭ জানুয়ারি পাসপোর্টসহ হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করার আগেই আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করেন।

চট্টগ্রাম মহানগর প্রসিকিউশনের পরিদর্শক আমিনুর রশিদ বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে এটি ফৌজদারি অপরাধ এবং আদালতের সঙ্গে প্রতারণা।

আদালত এরই মধ্যে সাক্ষ্য গ্রহণ স্থগিত করে আগামী বছরের জানুয়ারিতে নতুন তারিখ দিয়েছে। ওই দিনই সানি পাসপোর্টসহ হাজির হবেন বলে নির্দেশ আছে। এখন সবার দৃষ্টি সেদিনের দিকে, যখন প্রকাশ পেতে পারে বছরের পর বছর ধরে চলা ভুয়া হাজিরার রহস্য।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *