এএইচএম ফিরোজ আলী:: আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ ও তিন লাখ মা-বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। দেখতে দেখতে পূর্ণ হয়ে গেল বিজয়ের ৫০বৎসর। বিশ্বের ইতিহাসে বাংলাদেশ নামের একটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন আহমদ, কামরুজ্জামান, এম মনসুর আলী সহ সকল জাতীয় বীরদের জানাই্ বিনম্র শ্রদ্ধা। এ দিন রের্সকোস ময়দানে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী অস্ত্র সমর্পন করে। পৃথিবীতে একমাত্র বাঙালি জাতিই দেশের স্বাধীনতার জন্য সবচেয়ে বেশি জীবন বির্সজন দিয়েছেন। আমরা স্যালুট জানাই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গের প্রতি।
স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল পূর্ব বাংলার মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি। টুঙ্গিপাড়ায় ১৯২০ সালে জন্ম নেয়া বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন বিট্রিশরা দু’শত বছর এই অঞ্চলকে শোষণ করেছে। পাকিস্তানিরা দীর্ঘ তেইশ বছরে বাঙালিকে শাসন শোষণ করে অমানুষ হিসেবে গণ্য করেছে। তারা প্রথমে মায়ের ভাষা বাংলাকে কেড়ে নিয়ে বাঙালির উপর উর্দু ভাষা চালিয়ে দিতে চেয়েছিল। তাতেও বাঙালি রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বঙ্গবন্ধু বাংলার স্বাধীনতার জন্য সারা জীবন জেল, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করেছেন। ১৯৭১সালে ৭ মার্চের দুনিয়া কাপানো বিশ মিনিটের ভাষণ দিয়ে ঘুমন্ত বাঙালিকে জাগ্রত করে মুক্তিযুদ্ধে জাপিয়ে পড়ার নিদের্শ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমি যদি হুকুম দিতে নাও পারি, তোমরা শত্রুর মোকাবেলা করবে। বাঙালি তার নেতার নিদের্শকে যথাযথভাবে পালন করে দেশের রক্তিম সূর্য ছিনিয়ে আনে। ৭২ সালের ১০ জানুয়ারী পাকিস্তানের কারাগার থেকে ফিরে এসে দেশে গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করলে পাকিস্তানের শত্রুরা ৭৫সালে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে এদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে পঙ্গু করে দেয়।
১৯৮১ সালের ১৭ মে ভারতে নির্বাসনে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে এশিয়া মহাদেশের জনপ্রিয়, শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগকে পূর্ণগঠন করে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করতে সংগ্রাম শুরু করেন। ৯৬সালের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্টা অর্জনের মাধ্যমে দেশের রাষ্ঠ্র ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা ইনডেমরেটি বিল বাতিল ও ইতিহাস বিকৃতিকে দমন করেন। বিশেষ করে ২০০৮সালের নির্বাচনের পর জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমন ও দেশে বড় বড় মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে দেশের অর্থনৈতিক ভীত মজবুত করেন। জাতিসংঘ বাংলাদেশকে এখন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য সন্তান সজিব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন। এখন বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার ইমাজিং টাইগার খ্যাতি অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং তাঁর তণয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ঠ্রে উপনীত হচ্ছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই বিজয়ের এই দিনে। সকল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। দেশের মুক্তিগামী মানুষ ও নতুন প্রজন্মরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত রাষ্ঠ্র গঠনে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে লালন করে এ দেশকে উন্নত রাষ্ঠ্র গঠনে নিরলস পরিশ্রম করে যাবেন। এই প্রত্যাশায়। এগিয়ে যাও বাংলাদেশ, বদলে যাও প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।