নিজস্ব সংবাদদাতা : সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দাপটের সাথে নির্বাচিত হয়েছেন এবং সরকার দলীয় নৌকার প্রার্থীদের শোচনীয়ভাবে ভরাডুবি হয়েছে। সোমবার রাত পৌনে ১১টার এসব তথ্য জানাগেছে।
৩নং অলংকারী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও প্রবাসী বিএনপি নেতা আতিকুর রহমান লিটন। তিনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭২৮ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির বহিস্কৃত নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান (স্বতন্ত্র প্রার্থী) নাজমুল ইসলাম রুহেল, চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯৪১ভোট। আর নৌকা প্রতীকে ৭৩৪ভোট পেয়েছেন তাজুল ইসলাম মাইকেল। ৪নং রামপাশা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ইমাম উদ্দিন আনারস প্রতীকে ৫৮৮৬ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিস্কৃত নেতা বশির আহমদ চশমা প্রতীকে ৫৭৮০ভোট পেয়েছেন। আর ১৫০৫ আওয়ামীলীগের প্রার্থী আরব আলী চতুর্থ হয়েছেন।
৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিস্কৃত নেতা হাফিজ আরব খান চশমা প্রতীকে ৮৮৯৭ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামীলীগের প্রার্থী ওয়াহাব আলী নৌকা প্রতীকে ২৪৩৭ভোট পেয়েছেন। ৬নং সদর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. দয়াল উদ্দিন তালুকদার আনারস প্রতীকে ৩৪৪৮ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামীলীগের প্রার্থী আব্দুল জলিল হিরণ মিয়া নৌকা প্রতীকে ১২৮০ভোট পেয়েছেন।
৭নং দেওকলস ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান ফখরুল আহমদ মতছিন আনারস প্রতীকে ২৭০৩ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জামায়াত নেতা হোসাইন মোহাম্মদ আক্তার ফারুক চশমা প্রতীকে ২৩১৬ভোট পেয়েছেন। আর নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৯৫৭ ভোট পেয়ে ৩য় হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালাম জুয়েল।
এর আগে সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যালটের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটারদের দীর্ঘ লাইনে পুরুষ ভোটারদের তুলনায় নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পাঁচ ইউনিয়নের ৪৫টি কেন্দ্রে ভোট উৎসবে যোগ দেন ৭৯ হাজার ৭৭১ জন ভোটার।
উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম সারওয়ার জানান, উপজেলার ৫ ইউনিয়নে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন ৭৬৪ জন কর্মকর্তা। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমান পুলিশ ও আনসার বাহীনির সদস্যরা দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া ৫জন ম্যাজিষ্ট্রেটসহ ৫টি স্টাইকিং ফোর্স সার্বক্ষণিক দ্বায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনকে সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ চারস্তরের নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়। উপজেলার ৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মিলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ২৫৯ জন প্রার্থী।