প্রেসিডেন্ট রাইসি নিহত : দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যা

অপরাধ আন্তর্জাতিক জাতীয়
শেয়ার করুন

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে এক মর্মান্তিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। একই সঙ্গে মৃত্যু ঘটেছে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমতি এবং এ প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনির মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আল-হাশেমের। দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারের পাইলটসহ ৯ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন। তবে এটি দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যাÑ তা নিয়ে কোনো কোনো মহল সংশয় প্রকাশ করেছে।

গতকাল সোমবার সকালে প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা বা আইআরএনএ। ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলোতেও ড্রোন থেকে নেওয়া দুর্ঘটনাস্থলের ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ দুর্ঘটনায় নিহত অন্যদের মরদেহ উদ্ধার করার কথাও জানিয়েছে ইরনা।

এই হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের কারণ হিসেবে ইরানের সরকারি ভাষ্যে বৃষ্টি, কুয়াশাসহ খারাপ আবহাওয়ার দিকেই ইঙ্গিত করা হচ্ছে। কিন্তু ইতোমধ্যে এমন গুঞ্জনও উঠেছে যে, এটি নাশকতা হতে পারে। প্রশ্ন উঠেছে, বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবার ক্ষমতায় আসা এবং ইরানের ভেতরে-বাইরে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি থাকা রাইসির এই মৃত্যুর ঘটনায় ভেতরের শত্রু কিংবা ইসরায়েলের মতো বাইরের খেলোয়াড় বা ক্রীড়নকেরা যুক্ত কি না।

প্রসঙ্গত, গত সাত মাস ধরে গাজায় একটানা আক্রমণ চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। তাদের প্রতিরোধের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস এবং লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। ইরানের বিরুদ্ধে এ দুই সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ এনে ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে কড়া সমালোচনা করে চলেছে।

দুর্ঘটনার পর আন্তর্জাতিক সাপ্তাহিক ইকোনমিস্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল কর্তৃক দামেস্কে ইরানের একজন জেনারেলকে হত্যা এবং পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাসহ দুই দেশের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে রাইসির মৃত্যুর নেপথ্যে ইসরায়েলের হাত থাকার ধারণা দানা বেঁধে উঠেছে।

তবে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানি স্বার্থের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চালানোর সঙ্গে জড়িত বলে বিভিন্ন সময় আলোচিত হলেও কখনও কোনো রাষ্ট্রপ্রধান তাদের লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে- এমন উদাহরণ নেই। ইতঃপূর্বে কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যা করার মতো সিদ্ধান্তও ইসরায়েলকে নিতে দেখা যায়নি।

বিশেষজ্ঞরাও রাইসির মৃত্যুর পেছনে ইসরায়েলের হাত থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছেন না। তবে দ্য ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে যে, রাইসির মৃত্যু ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে। কারণ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলের প্রতিপক্ষ হামাস ও হিজবুল্লাহর মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছিলেন।

যেখান থেকে সন্দেহের শুরু

ইরানের স্বার্থে এমন কোনো পদক্ষেপ নেই, যা নিতে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দ্বিধা করেছেন। এ কারণে চিরশত্রু ইসরায়েল তো বটেই, এমনকি পশ্চিমাদের চক্ষুশূল ছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের জাঁদরেল এই নেতা। যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরও তিনি অব্স্থান পাল্টাননি, আপস করতেও রাজি হননি।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আসার পর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়তে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর রিক স্কটকে। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‌‘তাকে (রাইসি) ভালোবাসা বা সম্মান নয়, এমনকি কেউ তাকে মিসও করবে না। যদি তিনি মারা যান, আমি সত্যিই আশা করি ইরানি জনগণ তাদের দেশকে খুনি স্বৈরশাসকের হাত থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবে।’

তবে ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় ইসরায়েলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমরা এর সঙ্গে জড়িত নই।’

ওদিকে ইসরায়েলের স্থানীয় গণমাধ্যমকে দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা এম কে আভিগদর লিবারম্যান বলেন, ‘রাইসির মৃত্যুর পর মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে- ইসরায়েল এমন আশা করে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য এটি (রাইসির মৃত্যু) কোনো বিষয় নয়। এ ঘটনা ইরানের প্রতি ইসরায়েলের দৃষ্টিভঙ্গিতেও কোনো প্রভাব ফেলবে না। কারণ, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা (আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি) দেশটির নীতি নির্ধারণ করেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট যে নিষ্ঠুর লোক ছিলেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা তার জন্য এক ফোঁটা অশ্রুও ফেলব না।’

ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছে সৌদি আরব, তুরস্ক, রাশিয়া, চীন, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নও শোক জানিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

এমন প্রেক্ষাপটে এই প্রশ্ন উঠছে, এটি নেহাত দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারণ ইরানের গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিকদের কোনো কারণে মৃত্যু ঘটলে মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতেই শুধু নয়, বিশ্বরাজনীতিতেও সবচেয়ে লাভবান হবে ইসরায়েল। সন্দেহের আঙুল উঠছে যুক্তরাষ্ট্রের দিকেও। কারণ একমাত্র ইরানের কারণেই মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে প্রভাব কমেছে ওয়াশিংটনের। সেখানে জায়গা করে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের চরম শত্রু চীন। রাশিয়ার সঙ্গেও রাজনৈতিক সখ্য গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে ইরানের। জেনারেল কাশেম সোলাইমানির মতো প্রভাবশালী নেতাকে হত্যা করার ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা রয়েছে। বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েও ইরানকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে ফেরাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। তাই রাইসিকে টার্গেট করতে পারে বাইডেন প্রশাসন সেই শঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

তবে খোদ ইরানের প্রশাসন এ নিয়ে কোনো কথা বলছে না। তারা এখন পর্যন্ত দুর্গম পাহাড়ে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনাকে দুর্ঘটনাই বলে আসছে।

প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে মোহাম্মদ মোখবার

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট বেছে নিয়েছে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ গার্ডিয়ান কাউন্সিল সোমবার এ পদে ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবারের নাম জানিয়েছে।

গার্ডিয়ান কাউন্সিলের মুখপাত্র হাদি তাহান নাজিফ গতকাল এক সাক্ষাৎকারে জানান, সংবিধান মেনে সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদনের ভিত্তিতে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন। মোখবার দেশের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করার ৫০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবেন।

ইরান সরকার গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দেশের সরকারি কাজে সামান্যতম বিচ্যুতি ঘটতে দেবে না তারা। মন্ত্রিপরিষদের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাইসি ক্লান্তিহীনভাবে যেভাবে দেশ পরিচালনা করতেন, সেভাবেই তারা এগিয়ে যাবেন। এতে সামান্যতম বিচ্যুতি হবে না।

মোখবার বয়সে সদ্য প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির চেয়ে বড়। ইব্রাহিম রাইসি ২০২১ সালে নির্বাচনে ইরানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মোহাম্মদ মোখবার তার মন্ত্রিসভার প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট হন।

তা ছাড়া ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাগেরি কানিকে দেশটির ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আলী বাগেরি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে ২০০৭ থেকে ২০১৩ সালে তিনি ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন।

বিধ্বস্ত হওয়ার ঘণ্টাখানেক পরও বেঁচে ছিলেন এক আরোহী

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানাচ্ছে, ৬৩ বছর বয়সি প্রেসিডেন্ট রাইসি রবিবার আজারবাইজান সীমান্তের কাছে ইরানের একটি জলাধার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন। পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের ভার্জাকন এলাকায় জরুরি অবতরণ করার সময় তার হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ভার্জাকন এবং জোলফা শহরের মধ্যে ডিজমার জঙ্গলে। হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার ঘণ্টাখানেক পরও বেঁচে ছিলেন এক আরোহী। সাহায্যের জন্য তিনি যোগাযোগের চেষ্টাও করেছিলেন। তার নাম মোহাম্মদ আলী আল-হাশেম। তিনি ছিলেন তাবরিজ শহরের শুক্রবার জুমার নামাজের ইমাম এবং পূর্ব আজারবাইজানে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির প্রতিনিধি।

পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক 

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান নিহতের ঘটনায় পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে ইরান। গতকাল রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবারকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গতকাল এ তথ্য জানানোর পাশাপাশি পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলি খামেনি।

ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর খবরে শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তা আল-সিসি, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী।

ইব্রাহিম রাইসির দাফন আজ মঙ্গলবার তাবরিজে অনুষ্ঠিত হবে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম তাসনিম জানিয়েছে। ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে তাসনিম আরও জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি তার নিহত সফরসঙ্গীদের দাফনও হবে সেখানে। তার আগে মরদেহগুলো তাবরিজের ফরেনসিক বিভাগে রাখা হবে।

ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ অন্যদের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার পৃথক বার্তায় তারা শোক জানিয়েছেন।

শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেন। তিনি দেশটির নাগরিক ও প্রেসিডেন্টের স্বজনদের গভীর সমবেদনা জানান।

পৃথক এক শোকবার্তায় রাইসিকে একজন বড় মাপের নেতা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি সারা জীবন তার দেশের জন্য কাজ করে গেছেন। তার কাজের উপকার ভোগ করছেন দেশটির নাগরিকরা।’

তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গভীর শোকপ্রকাশের পাশাপাশি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

এর আগে গত শনিবার কয়েকজন সহযোগীসহ আজারবাইজান সফরে যান প্রেসিডেন্ট রাইসি। সেখানে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠান শেষে ফিরে আসার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রেসিডেন্ট রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানের পাশাপাশি হেলিকপ্টারটিতে ইরানের আরও বেশ কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তাও ছিলেন।

তারা হলেন- পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমতি, পূর্ব আজারবাইজানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলি আল-হাশেম ও প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান মেহেদি মুসাভি। এ ছাড়া হেলিকপ্টারের পাইলট, কো-পাইলট ও ক্রুও মারা গেছেন।

৬৩ বছর বয়সি রাইসি ২০২১ সালের জুন থেকে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।

অপূরণীয় ক্ষতি : মির্জা ফখরুল

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ দেশটির জ্যেষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু মুসলিম বিশ্বের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি একজন অসাধারণ রাষ্ট্রনায়ক।

গতকাল সোমবার দলের সহদপ্তর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেনের সই করা এক বার্তায় বিএনপি মহাসচিব এ শোকপ্রকাশ করেন।

তিনি ইরানের প্রেসিডেন্টসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং শোকাহত পরিবারবর্গ ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা ইরানের জনগণ এবং প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ নিহতদের পরিবারের সদস্যদের যেন এ অপূরণীয় ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার শক্তি দেন। পাশাপাশি যারা আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।’


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *