প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসে দু’বছর কারাভোগ শেষে কলকাতা ফিরে গেল প্রিয়াংকা

জাতীয় সারাদেশ
শেয়ার করুন

অনলাইন ডেস্ক :: প্রেম করে অবৈধ পথে বাংলাদেশে ঢুকেছিল কলকাতা হাওড়ার মেয়ে প্রিয়াংকা নস্কর (১৮)। এরপর সীমান্তে বিজিবি তাকে আটক করে। ঠাঁই হয় কারাগারে। সেখানে ছিল দু’বছর। কারাভোগ শেষে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দু’দেশের সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত দেয়া হয় তাকে।

প্রিয়াংকা জানান, বাংলাদেশের নারায়নগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ছেলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই ছেলের পিসির বাড়ী হাওড়াতে তাদের বাড়ীর পাশে। সেখান থেকে পরিচয়, তারপর প্রেম। বিয়ের পর নারায়নগঞ্জে গামের্ন্টেসে চাকুরী দেবে তাকে। এরপর ওই ছেলের সাথে বিয়ে করার জন্য সে ২০২২ সালের ৩ অক্টোবর দালালদের মাধ্যমে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্ত গলিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢোকে। সে সময় সে সীমান্তে বিজিবির হাতে ধরা পড়ে। তাকে পুলিশে সোপর্দ করে বিজিবি। আদালতে নেয়া হলে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তার দু’বছরের কারাদন্ড  হয়। এরপর ২৩ মাস ছিল ঝিনাইদহ কারাগারে কারাবরণ করে প্রিয়াংকা।প্রিয়াংকা আরো জানান, ‘সে ভুল করেছে। প্রেম করে বাংলাদেশে যে ছেলের কাছে আসতে গিয়ে ধরা পড়ে, কারাগারে যাওয়ার পর সে কোনদিন খোঁজ নেয়নি। তাকে ভুলে গেছে। জীবন থেকে তার দু’বছর ঝরে গেল। তার মতো ভুল যেন কোন মেয়ে না করে।’প্রিয়াংকার বাবা প্রতাব নস্কর ও মা তনুশ্রী নস্কর মেয়ে নিতে এসেছিলেন দর্শনা সীমান্তে। এ সময় মেয়েকে ফিরে পেয়ে বুকে নিয়ে হাউ-মাউ করে কেঁদে ওঠেন তারা।মা তনুশ্রী বলেন, দু’বছর মেয়েকে হারিয়ে অনেক কষ্টে ছিলাম। রাতে ঘুমোতে পারিনি। আমার মেয়ে ভুল করেছে।প্রিয়াংকার বাবা প্রতাব নস্কর বলেন, ‘মেয়ে হারিয়ে যাওয়ার কোন খোঁজ পায়নি।

৮ মাস আগে বাংলাদেশ থেকে একজন মোবাইল ফোনে জানায়, তাদের মেয়ে ঝিনাইদহ কারাগারে আছে। দুটি বছর বাংলাদেশের কারাগারে আমার মেয়ে ভালছিল। দু’দেশের সরকারের মাধ্যমে মেয়েকে ফিরে পেলাম।  যারা আমার মেয়েকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিল আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’ঝিনাইদহ কারাগারের ডেপুটি জেলার তানিয়া বলেন,‘প্রিয়াংকা প্রায় দু’বছর আমাদের কারাগারে ছিল। সে ভদ্র মেয়ে। আমরা তাকে যতদুর পেরেছি কারাগারে ভাল রেখেছিলাম। তাকে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিতে পেরে আমরা খুশি।’পশ্চিমবঙ্গের এনজিও কর্মী চিত্তরঞ্জন বলেন, ‘মেয়েটির বয়স অল্প। সে ভুল করেছে। এ রকম ভুল যেন কেউ না করে। এ জন্য অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।’ চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ইমিগ্রেশণ চেকপোস্টে দু’দেশের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রিয়াংকাকে হস্তান্তর করে বিজিবি, বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন-কাস্টমস ও কারা কর্তৃপক্ষ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিবির আইসিপি কমান্ডার নায়েব সুবেদার মোস্তফা মিয়া, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ এসআই আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ কারাগারের ডেপুটি জেলার তানিয়া, কাস্টমস কর্মকর্তা কাবিল হোসেন, দর্শনা থানার এসআই ফাহিম। ভারতের পক্ষে ছিলেন বিএসএফের গেদে ক্যাম্পের এসিসট্যান্ট কমিশনার তাপস, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ সঞ্জিব কুমার বোস, কাস্টমস কর্মকর্তা আরপি যাদব, কৃষ্ণগঞ্জ থানার এসআই তন্ময় দাস প্রমুখ। সুত্র-দৈনিক ইনকিলাব


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *