বরাদ্দের নামে প্রতিবন্ধীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা এসএম নুনু মিয়ার বিরুদ্ধে আরও ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট প্রথম আদালতে পৃথক এই ৪টি মমালা দায়ের করেন চার ভূক্তভোগী। তারা সকলেই উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের আমতৈল এলাকার বাসিন্দা। এই ৪টি মামলা নিয়ে মোট ১৫ মামলায় অভিযুক্ত হলেন উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়া।
পৃথক ৪টি মামলায় বাদী সরকারি বরাদ্দ (ডিপ টিউবওয়েলসহ ‘ওয়াশ ব্লক’) দেবার নাম করে ৭৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া ও তার পিএস দবির মিয়ার বিরুদ্ধে। চার মামলাতেই উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি এবং তার পিএস পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য দবির মিয়াকে ২য় আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া ওই ৪ মামলার দু’টিতে ৩য় আসামি করা হয়েছে মুছা মিয়া নামের আরও একজনকে। তিনি পাশ্ববর্তি মাখরগাঁও (ধলী পাড়ার) গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খায়রুননেছা তান্নী ও অ্যাডভোকেট সুমন পারভেজ।
তারা জানান, বৃহস্পতিবার জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ২য় আদালতে শুনানী শেষে আদালতের বিচারক দিলরুবা ইয়াসমিন মামলা ৪টি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য বিশ^নাথ থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) দায়িত্ব প্রদান করেছেন।
বাদী ৪জনের একজন হচ্ছেন আকবর আলী (২৩)। তিনি আমতৈল জমসেরপুর গ্রামের ছাবির উদ্দিনের ছেলে। তিনি তার দায়ের করা ‘বিশ্বনাথ সিআর ৩৮১/২০২৩’ নং মামলায় অভিযোগ করেছেন, চলতি ২০২৩ ইং সালের গত জানুয়ারি মাসে তার প্রতিবন্ধী বাবা ছবির উদ্দিনের নামে একটি ‘ওয়াশ ব্লক’ পেতে উপজেলা চেয়ারমান নুনু মিয়ার কাছে যান। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যাানের পরামর্শে তার পিএস দবির মিয়ার নিকট ২০হাজার টাকা জমা দেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও বরাদ্দ না পেয়ে গত ১ অক্টোবর চেয়ারম্যান ও তার পিএসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে টাকার বিষয়টি তারা অস্বীকার করেন।
একই অভিযোগ আমতৈলের ফয়জুল করিমের (৪৮)। তিনি তার দায়ের করা ‘বিশ্বনাথ সিআর ৩৮২/২০২৩’ নং মামলায় অভিযোগ করেছেন, তার প্রতিবন্ধী শিশুপুত্র মুরছালিনের জন্য ‘ওয়াশ ব্লক’ পেতে জানুয়ারি মাসে মাখরগাঁওয়ের মুছা মিয়ার মাধ্যমে দবির মিয়ার নিকট ২০ হাজার টাকা জমা দেন। কিন্তু সম্প্রতি টাকার বিষয়টি অস্বীকা করায় চেয়ারম্যান ও তার পিএস এবং মুছা মিয়াকে আসামি করে তিনি মামলা দায়ের করেছেন।
অপর মামলার বাদী আমতৈল গ্রামের আলী আহমদ (৪২) তার দায়ের করা ‘বিশ্বনাথ সিআর ৩৮৩/২০২৩’ নং মামলায় অভিযোগ করেছেন, একই সময়ে মাখরগাঁওয়ের মুছা মিয়ার মাধ্যমে দবির মিয়ার নিকট ১৫ হাজার টাকা জমা দেন। কিন্তু টাকা ও বরাদ্দ কোনটাই পাননি। এজন্য মামলায় চেয়ারম্যান ও তার পিএসের সঙ্গে মুছা মিয়াকেও আসামি করেছেন।
আর আমতৈল জমশেরপুরের তেরাব আলী (৬০) তার দায়ের করা ‘বিশ^নাথ সিআর ৩৮৪/২০২৩’ নং মামলায় অভিযোগ করেছেন, তিনি তার প্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিবন্ধী মেয়ে ফাহমিদা খাতুনের জন্য ‘ওয়াশ ব্লক’ পেতে একই সময়ে দবির মিয়ার নিকট ২০হাজার টাকা জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও টাকা কিংবা বরাদ্দ কোনটাই পাননি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া বলেন, এসকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। কারণ হিসেবে তিনি জানান, দীর্ঘদিন থেকে একটি পক্ষ সমাজে তাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা মামলা দায়ের করাচ্ছে।