দ্রুত ফুরিয়ে আসছে খাবার : কমছে খাবার পানিও : জিম্মি ‘এমভি আব্দুল্লাহ’

অপরাধ আন্তর্জাতিক জাতীয়
শেয়ার করুন

ডাক ডেস্ক : আস্তে আস্তে ফুরিয়ে আসছে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজে জিম্মি থাকা বাংলাদেশের ২৩ নাবিকের খাবার। কমে যাচ্ছে খাবার পানিও। গত মঙ্গলবার জাহাজটি যখন সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে, তখন সেটিতে ২৫ দিনের খাবার ও পানি মজুত ছিল। দস্যু দল হানা দেওয়ার পর কেটে গেছে সাত দিন। খাবার ও পানিতে এরই মধ্যে ভাগ বসিয়েছে জলদস্যুরাও। তাই দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে পানি ও খাবার। এখন যে খাবার ও পানি মজুত আছে, তা ১০ থেকে ১২ দিন চলতে পারে। এগুলো ফুরিয়ে গেলে কী হবে– তা নিয়ে স্বজনের কাছে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন জিম্মি নাবিকরা।

খাবার ও পানি পাঠাতে কেনিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সাহায্য চেয়েছে জাহাজের মালিকপক্ষ। বীমা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে তারা। বীমা প্রতিষ্ঠান আবার মাধ্যম হিসেবে খুঁজছে মধ্যস্থতাকারী কোনো পক্ষকে; যাদের সঙ্গে জলদস্যুদের যোগাযোগ আছে। তবে জলদস্যুদের কেউ এ ব্যাপারে কথা বলছে না। তাই উৎকণ্ঠা বাড়ছে স্বজনের মাঝে। জাহাজে রান্না, গোসল ও পান করার জন্য বিশুদ্ধ পানি মজুত রাখা হয়। জাহাজ ভেদে প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ টন পানি লাগে।

জিম্মি থাকা নাবিকদের খাবার ও পানির বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে মালিকপক্ষও উপস্থিত ছিল। বৈঠকে অনলাইনে যুক্ত হন কেনিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। খাবার ও পানি সরবরাহে কোনো মধ্যস্থতাকারীর ব্যবস্থা করা যায় কিনা, সে বিষয়ে তখন তাঁর সহযোগিতা চায় মালিকপক্ষ। রাষ্ট্রদূত তখন খাবার ও পানি কীভাবে সরবরাহ করা যায়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে এখনও কোনো ব্যবস্থা করতে পারেননি রাষ্ট্রদূত। তাই বিকল্প হিসেবে বীমা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে মালিকপক্ষ।

জাহাজ এক বন্দর থেকে আরেক বন্দরে যাওয়ার সময় মাছ, মাংস, ফল, ডাল, চাল, সবজিসহ কিছু শুকনো খাবার নিয়ে নেয়। নোঙর করার কাঙ্ক্ষিত সময়ের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ দিনের বাড়তি খাবার নেয় তারা। লবণাক্ততার জন্য জাহাজে সাগরের পানি ব্যবহার করা যায় না। তাই জাহাজে পানি সরবরাহ করে সাহায্যকারী জলযান ‘টাগবোট’। গত মঙ্গলবার জলদস্যুর কবলে পড়ার সময় ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজে ২০ থেকে ২৫ দিনের খাবার ছিল বলে এক অডিও বার্তায় জানান জাহাজের চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান। এসব খাবার ও পানিতে যদি জলদস্যুরা ভাগ বসায় তাহলে তা আরও কম সময়ে ফুরিয়ে যাবে। এ নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে জাহাজ মালিকপক্ষকে অনুরোধও জানান চিফ অফিসার। তাঁর সেই বার্তা পাঠানোর পর কেটে গেছে সাত দিন; ব্যবস্থা হয়নি।

জাহাজের মালিকপক্ষের মুখপাত্র ও কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘নাবিকদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। জিম্মি থাকলেও তারা সবাই সুস্থ আছেন। এখন জাহাজে যে খাবার ও পানি আছে, তা বেশি দিন যাবে না। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে জলদস্যুরা অনেক সময় উপকূল থেকে এনে প্রয়োজন মেটায়। তার পরও আমরা বিকল্প পথে এগোচ্ছি। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে খাবার ও পানির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। সুত্র-দৈনিক সমকাল


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *