স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্বব্যাপী মরণব্যাধি করোনা ভাইরাসে লক্ষাধিক মানুষ ইতিমধ্যে মারা গেছেন। সারা বিশ্বে যেন মানবিক বিপর্যয় ঘটছে। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার মহামারি এ রোগ প্রতিরোধে নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। করোনা রোগী শনাক্তে গ্রাম ডাক্তারদের প্রশিক্ষন দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ কর্মচারীদের করোনার প্রতিরোধ সরঞ্জামাদি দেয়া হচ্ছে। গত এগার এপ্রিল অধিদপ্তরের এক পরিপত্রে বলা হয়েছে, চিকিৎসক কর্মকর্তা, উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, ফার্মাসিস্ট, সহকারি নার্সিং এসিস্ট্যান্টদের নিরাপত্তা সামগ্রী (পিপিই) প্রদান করা হবে। একই দিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক পৃথক পরিপত্রে স্বাস্থ্য সহকারী, সিএইচসিপি, এসএইচপিএদের করোনা কার্যক্রম প্রতিরোধে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব কর্মচারীদের রোগী শনাক্ত সচেতনমূলক কার্যক্রমে সাফল্য আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ পদক্ষেপ সময়পযোগী বলে কর্মচারীরা মনে করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের তৃনমূলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবক পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠকর্মী পরিবার কল্যাণ সহকারী (FWA) পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক (FPI) যারা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা উভয় বিভাগের তৃনমূল পর্যায়ে কাজ করে বাংলাদেশের রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন, সেই কর্মচারীদের করোনা প্রতিরোধ সরঞ্জামাদি (পিপিই) প্রদানে তালিকাভুক্ত না করায় সারা দেশের (FWA) ও (FPI)দের মধ্যে চাপা ক্ষোভ, হতাশা ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। সারা দেশে প্রায় সাড়ে উনত্রিশ হাজার (FWA) ও (FPI) রয়েছেন। তাদের হাতে যে রেজিস্ট্রাড বা ট্যাব রয়েছে তাতে প্রবাসী সহ প্রতিটি পরিবারের যাবতীয় তথ্য রয়েছে যা অন্য কোন বিভাগে কর্মচারীদের হাতে নেই। সেই কর্মচারীদের (পিপিই) দেয়ার তালিকা থেকে বাদ দেয়া রহস্য জনক বলে কর্মচারীরা মনে করছেন। বিশ্বনাথের ডাক ২৪ডটকম এর পক্ষ থেকে গত দুই দিনে সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ত্রিশ চল্লিশজন (FWA) ও (FPI)দের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। কর্মচারীরা জানান করোনা প্রতিরোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাধারন ছুটি ঘোষনা করেছেন। কিন্তু ছুটি থাকাসত্বেও দেশের অনেক অঞ্চলে ঝুকি নিয়ে স্যাটেলাইট ক্লিনিক, কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। আবার প্রতিটি ইউনিয়নে করোনা প্রতিরোধ কমিটিতে (FWA) ও (FPI)দের রাখা হয়েছে। (FWA), স্বাস্থ্য সহকারী, সিএইচসিপি একসাথে কাজ করেন। কিন্তু (FWA)দের (পিপিই) না দেয়ায় অত্যন্ত দুঃখজনক ও পক্ষপাত বলে অনেকেই মনে করছেন। কর্মচারীরা জানান সবার উপরে মানুষ সত্য তার উপরে নেই, প্রধানমন্ত্রীর এমন ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে চাই তারা। তাই এ ব্যাপারে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। চাকুরীর ভয়ে অনেক কর্মচারী তাদের পরিচয় গোপন রাখতে অনুরোধ করেছেন। কক্সবাজারের মহেশখালি উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নে, মাতার বাড়ি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত পরিবার কল্যাণ সহকারী (সিএসবিএ) প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সুলতানা বেগম টেলিফোনে জানান করোনা ঝুকি এবং আতঙ্ক নিয়ে তিনি গত এগারো দিনে এগারোটি নরমাল ডেলিভারি করেছেন। তিনি জানান, আমি (পিপিই) পেয়েছি। তবে সারা দেশের (FWA) বোনদের এসব সরঞ্জামাদি প্রদানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শুভ দৃষ্টি কামনা করছি। (উপরের ছবিটি সুলতানা বেগম নরমাল ডেলিভারি করেছেন)
বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা মাঠ কর্মচারি সমিতি কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক মো: ফিরোজ আলী বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কর্মচারিদের প্রশিক্ষণ ও পিপিই প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
(FWA) ও (FPI)দের সংগঠন বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা মাঠ কর্মচারী সমিতি ময়মনসিংহ বিভাগ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মোছাঃ হাজেরা খাতুন, কক্সবাজার জেলা কমিটির সভাপতি ইজ্জতুল আনোয়ার রোমেল, ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি মোঃ জিয়াউর রহমান সকলেই করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করে বলেন, আমরা অনেক সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে রোধ বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করেছি। করোনা ভাইরাসে জনগনকে সচেতন করতে মাঠে রয়েছি। প্রতিরোধমূলক (পিপিই) দিলে কাজ করতে আমাদের অনেক সুবিদা হবে। সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি রাশেদা খানম রিনা ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক কয়েছ রশিদ দিলওয়ার জানান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মচারীদের কাজ সারা বিশ্বে নন্দিত ও প্রশংসিত। কিন্তু আমাদের বিভাগেই আমরা অবহেলিত। আমরা করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধে নিরলস কাজ করে যাবো। শুধু আমাদের বিভাগ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপযুক্ত মর্যাদা ও মূল্যায়ন আশা করছি।