থাইল্যান্ডের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হলেন পেতংতার্ন

আন্তর্জাতিক জাতীয়
শেয়ার করুন

অনলাইন ডেস্ক :: ল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ধনকুবের থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেছে দেশটির পার্লামেন্ট।

৩৭ বছর বয়সী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা হবেন দেশটির সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তার ফুফু ইংলাক সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

গত বুধবার থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্রেথা থাভিসিনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার দু’দিন পর তাকে নিয়োগ দেওয়া হল। তাদের দু’জনেই ফেউ থাই পার্টির নেতা। ২০২৩ সালের নির্বাচনে ফেউ থাই পার্টি দ্বিতীয় হয়েছিলো এবং একটি ক্ষমতাসীন জোট গঠন করেছিলো।

মিজ পেতংতার্ন এখন থাইল্যান্ডের স্থবির অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার মতো কঠিন কাজের মুখোমুখি হয়েছেন। সামরিক অভ্যুত্থান সামাল দেওয়া এবং আদালতের হস্তক্ষেপ এড়িয়ে টিকে থাকাটাও তার জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জের বিষয়। আদালতের হস্তক্ষেপের কারণে তার দলের নেতৃত্বে পূর্ববর্তী চারটি প্রশাসন ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে।

“আমি সত্যিই আশা করি যে আমি মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস পুনঃস্থাপন করে দিতে পারবো– সকল থাই জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে আমরা সুযোগ তৈরি করতে পারি,” শুক্রবার নির্বাচনের পর তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।

তিনি খুব অভিভূত হয়ে বলেছিলেন যে উত্তেজনায় তার হাত কাঁপছে।

তিনি এও স্বীকার করেছেন যে তিনি “না সেরা, না সবচেয়ে প্রতিভাবান।”

“কিন্তু আমি সবসময় মনে করি আমার একটি দৃঢ় ইচ্ছা আছে এবং আমার একটি ভালো দল আছে। আমার দল মজবুত, অভিজ্ঞ, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং আমরা সকলে একই ধারণা পোষণ করি। এগুলো আসলে এমন কিছু, যা আমার কাছে খুব মূল্যবান,” তিনি বলেন।

পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে তার পক্ষে ৩১৯টি ভোট পড়েছে। আর বিপক্ষে ভোট পড়েছে ১৪৫টি। মিজ পেতংতার্ন হলেন গত দুই দশকে সিনাওয়াত্রা পরিবার থেকে প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া চতুর্থ ব্যক্তি।

তার বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রা ও ফুপু ইংলাক সিনাওয়াত্রাসহ অপর তিনজন সামরিক অভ্যুত্থান বা সাংবিধানিক আদালতের রায়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন।

দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত হয়ে একবার কারাগারে যাওয়া একজন প্রাক্তন আইনজীবীকে মন্ত্রিসভায় নিয়োগ দেওয়ার কারণে ওই একই আদালত বুধবার মি. থাভিসিনকে বরখাস্ত করেছে।

শুক্রবার মিজ পেতংতার্ন বলেছিলেন যে তিনি মি. থাভিসিনের বরখাস্তের বিষয়টি জানতে “দ্বিধান্বিত” এবং “খুব মর্মাহত” হয়েছিলেন।

মি. থাভিসিন ও নিজের পরিবারের সাথে কথা বলার পর মিজ পেতংতার্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে ”দল ও দেশের জন্য কিছু করার এখনই সময়”, তিনি বলেন।

তিনি আরও বলেন যে তার বাবা মি. থাকসিন তাকে “নিজের সেরাটা দিয়ে” কাজ করার উৎসাহ দিতে ফোন করে বলেছিলেন যে, তিনি তার বৃদ্ধ বয়সে এসে মেয়েকে এই দায়িত্ব পেতে দেখে উৎফুল্ল।

থাইল্যান্ডের স্কুল এবং যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন মিজ পেতংতার্ন। সিনাওয়াত্রা পরিবারের মালিকানাধীন রেন্ডে হোটেল শিল্প গোষ্ঠীতে কয়েক বছর কাজ করেছেন তিনি। তার স্বামী ওই শিল্প গোষ্ঠীর উপ-প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত।

২০২১ সালে তিনি ফেউ থাই-এ যোগ দেন এবং ২০২৩ সালের অক্টোবরে দলের নেতা হিসাবে নিযুক্ত হন।

তার নিয়োগ থাইল্যান্ডের শীর্ষ নেতৃত্বে নতুন শক্তি এনেছে। ফেউ থাই-এর সদস্যরাও হয়তো আশা করছেন যে তিনি দলের রাজনৈতিক ভাগ্য পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করতে পারেন।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *