অনলাইন ডেস্ক:: সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘কারও যদি জীবন বিপন্ন হয়, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে, অবশ্যই আমরা তাঁদের আশ্রয় দিয়েছি। তাঁদের প্রতি যদি কোনো অভিযোগ থাকে, মামলা হয়, অবশ্যই তাঁরা শাস্তির আওতায় যাবেন। কিন্তু অবশ্যই আমরা চাইব না যে বিচারবহির্ভূত কোনো কাজ হোক, হামলা হোক। তাঁদের জীবনের যে হুমকি আছে, সেটার জন্য আমরা তাঁদের আশ্রয় দিয়েছি। যে দলেরই হোক, যে মতেরই হোক, যে ধর্মের হোক, সেটা আমরা করব।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী সেনানিবাসে ব্রিফিংয়ে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের সেনা হেফাজতে নেওয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান এ কথা বলেন।
বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বহির্বিশ্বের কোনো চাপ নেই বলে দাবি করেছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, ‘কোনো চাপ নেই। তারা বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখছে। এটা বিশেষ একটা পরিস্থিতি। সবাই বুঝে। মাইনরিটি (সংখ্যালঘু) বিষয় নিয়ে কিছু কিছু কথাবার্তা হয়েছে। ২০টি জেলায় ৩২টির মতো জায়গায় মাইনরিটি নিয়ে একটা অরাজকতা হয়েছে, সেটা অবশ্যই একটাও কাম্য নয়। আমরা এই বিষয় দেখছি। যাঁরা অপরাধী, তাঁদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনব।’
গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা ও গাড়ি পোড়ানোর বিষয়ে বলেন, সেটা একটা ভুল–বোঝাবুঝি। পরিস্থিতি এখন একেবারেই শান্ত। তাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। তবে তারা যে অপরাধ করেছে, অবশ্যই তার তদন্ত হবে এবং তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান আরও বলেন, ‘আনসার, র্যাব, বিজিবিসহ সবার সঙ্গেই কথা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত হয়ে এসেছে। আমি বলব যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণভাবেই আমাদের নিয়ন্ত্রণে। পুলিশ কিছুটা ট্রমার মধ্যে আছে। ট্রমাটা কাটিয়ে উঠলে পুলিশ তাদের দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করতে পারবে। পুলিশ বিভিন্ন থানায় ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আমরা পুলিশকে প্রটেকশন দিয়ে যাচ্ছি। তারা সম্পূর্ণভাবে যখন কাজকর্ম শুরু করে দেবে, তখন পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তখন আমরা সেনানিবাসে ফেরত যাব। সেই পর্যন্ত আমরা থাকব এবং কাজ করে যাব। রাষ্ট্রের সংস্কার শেষে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজনে সেনাবাহিনী বর্তমান সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
আগস্ট ঘিরে এই গণ-অভ্যুত্থানের পর ‘প্রতিবিপ্লব’-এর কথা শোনা যাচ্ছে, এ ব্যাপারে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘আমার এ বিষয়ে জানা নেই।’
এ সময় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক আনিসুর রহমান, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, জেলার পুলিশ সুপার সাইফুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সেনানিবাসে স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সুত্র-প্রথম আলো