তবারকের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন:ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত কারা?

Uncategorized
শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে শুধু নয়, সারা বাংলাদেশের আলোচিত-সমালোচিত কুখ্যাত ইয়াবা ব্যবসায়ী তবারক আলীকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তবারককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। একটি হত্যাকান্ডে জড়িত থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবারককে গ্রেফতারের পর বিশ্বনাথ উপজেলা সহ সিলেটে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে। তবারকের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা ও জড়িত ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। ইয়াবার ব্যবসায় জড়িত সুবিধাভোগীদের সব হিসেব নিকাশ পাল্টে গেছে। সকল ছিদ্র বন্ধ করে বা ম্যানেজ করে নির্বিঘ্নে চলা ব্যবসায় হঠাৎ যেনো বিনা মেঘে বজ্রপাত। ইতিপূর্বে বিশ্বনাথের কয়েকজন চুনাপুটি চোরাচালানীকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু তবারক ছিলো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তার ব্যবসায় কোনো বাধা আপত্তি ছিলো না। ওসি গাজী আতাউর রহমান তাকে গ্রেফতার করায় কি যেন একটা অশনী সংকেত দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় সূত্রমতে, বর্তমান ওসিকে আয়ত্তে আনার সাহস করতে পারেনি তবারক। ইতিপূর্বেকার ওসির সময়ে তবারক সহ চোরাচালানীদের ক্ষমতা ও অর্থের দাপট ছিলো বেশী। এখন তবারকের ব্যবসা সাম্রাজ্য তছনছ হয়ে যেতে পারে- এমন আশংকা করছেন তার আশ্রয়- প্রশ্রয়দাতারা।
গ্রাম্য ভূমিহীন পরিবারের সন্তান তবারক আলীর বাড়ি বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের পাঠাকইন গ্রামে। পিতা :আলকাছ আলীর বাড়ির ভিটা ব্যতীত সম্পদ কিছুই ছিলো না। প্রথমে কৃষি শ্রমিক, চিছকে চোর, তারপর সিএনজি চোর ও ছিনতাই এ জড়িত হওয়ায় তবারকের নাম প্রচার হতে থাকে। বিশ্বনাথ থানা থেকে একবার হাতকড়া লাগানো অবস্থায়ও পালিয়েছিলো। বিবাহের পর তবারককে পিছনের দিকে তাকাতে হয়নি। ভাগ্য খুলে যায় তার। হাজার নয়, লাখ টাকা ও নয়, কোটি টাকার ব্যবসা শুরু করে তবারক। মদ,গাজা,হিরোইন, ইয়াবার জগতে পা দেয় তবারক। এখন সে কত হাজার কোটি টাকার মালিক নিজেই তা জানে না। বাসা,গাড়ি, বাড়ি, জায়গা, জমিন সবকিছু আছে তার।আখল -বুদ্ধি কম থাকলেও স্ত্রী এর পরামর্শে ও সহযোগীতায় চলছে জমজমাট ইয়াবা ব্যবসা। ব্যবসার পার্টনার বা বহনকারীরা কৌশলে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায় তবারকের। কয়েক কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেয় তবারক। এমন সব তথ্য জানান এলাকার লোকজন। সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকদের মধ্যে ব্যবসার টাকা ভাগ-বন্টন করেও দিতে হয়। নিরাপদে ইয়াবা গন্তব্যে পৌছে দেওয়ার জন্য পাঁচ কোটি টাকার চালান হলে দুই কোটি টাকা ভাগ -বাটোয়ারা করে দিতে হয়। গত ঈদে প্রায় চার কোটি টাকার ইয়াবার ব্যবসা করে তবারক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিভিন্ন রোড পরিবর্তন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে পৌছে যায় তবারক। প্রায় দুই -তিন মাস তাকে এলাকায় দেখা যায়নি। এসময় তবারকের লোকজন প্রচার করছিলো সে ভারতে পালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু সে ছিলো ঈদের সূযোগে ইয়াবার চালান নিয়ে ব্যস্ত।

দক্ষিন বিশ্বনাথে তিন কোটি টাকা খরচ করে বাসা তৈরি করলেও সেখানে বসবাস করতে পারছেনা তবারক। দেশে বিদেশে থাকা ইয়াবা ব্যবসায়ীরা যারা জড়িত হয়েছিলো ভাগ -বাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। কিছু তরুন ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সেবনকারী তবারককে এলাকা ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। জনৈক আইনজীবী, কয়েকজন রাজনীতিবিদ সমাজের দর্পণ নামে পরিচিতি অর্জনকারী লোকজন তবারককে টাকার বিনিময়ে ইয়াবা ব্যবসার সব ধরনের আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং সহযোগীতা করছেন। অনুসন্ধানে বেশকিছু ভদ্রবেশী লোকদের তথ্য পাওয়া গেছে। যারা তবারকের নিকট থেকে বিভিন্ন কৌশলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কেউ কেউ রাজনীতিবীদদের নামে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করেছেন। মরণ নেশা ইয়াবা বিক্রি করে তবারক দেশ জাতি ও রাষ্ট্রের চরম ক্ষতি করছে বটে। কিন্তু তার চেয়ে বড় অপরাধীরা হচ্ছে, যারা তাকে আশ্রয়- প্রশ্রয় সগযোগীতা করছে।তারা রাষ্ট্রের চরম শত্রু। তদন্ত করে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা জরুরি।

বিশ্বনাথ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান জানান তবারককে জিজ্ঞাসাবদের জন্য দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তথ্য- উপাত্ত সংগ্রহ করছি এবং কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

#মন্তব্য প্রতিবেদন


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *