জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাংচুরের ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন

অপরাধ সিলেট
শেয়ার করুন

ডাক ডেস্ক : সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় গত শনিবার দিবাগত রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন চার ছাত্রলীগ কর্মী। সেই রাতে তাৎক্ষণিক নিহতদের উদ্ধার করে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসা ও কর্তব্য অবহেলার অভিযোগে হাসপাতালে ভাংচুর করা হয়।

হাতপাতালে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার কারণ উদঘাটন ও দায় দায়িত্ব নিরুপনের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিট্রেট ইমরুল হাসানকে আহবায়ক করে গঠন করা এ তদন্ত কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসে জেলা প্রসাশক বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

এদিকে হাসপাতালে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রবিবার (২১ জানুয়ারি) বেলা ১১ ঘটিকায় সরিজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিট্রেট ও তদন্ত কমিটির আহবায়ক ইমরুল হাসান।

এ সময় তিনি হাসপাতালে জরুরী বিভাগ, ভাংচুর হওয়া কক্ষ,ক্ষতিগ্রস্ত ডাক্তার ও নার্স কোয়ার্টার, এম্বুলেন্স গ্যারেজ ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত ইউএইচএফপিও র সরকারি জিপ গাড়িটি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সেই রাতে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ হিল্লোল রায় ও সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও স্টাফদের সাথে কথা বলেন।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো রফিকুল ইসলাম, জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মনিশ্বর চৌধুরী,  ডেপুটি সিভিল সার্জন জম্মেজয় দও, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিলেট অতিরিক্ত বিভাগীয় পরিচালক মো মনিরুজ্জামান,  জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো সাজেদুল ইসলাম, এএসপি (কানাইঘাট সার্কেল)  অলক শর্মা, জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সালাউদ্দিন মিয়া, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ মমি দাস, জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম পিপিএম সহ অন্যান্যরা।

এদিকে হাসপাতালে ভাংচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২৫০-৩০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিকে আসামীকে করে জৈন্তাপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ৯/৯। জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সালাউদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে সে রাতের ঘটনা কর্তব্যরত চিকিৎসক ও হাসপাতাল স্টাফদের আক্রমণ ও ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করেন।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার সময় তারা জৈন্তাপুর থেকে একটি প্রাইভেটকার নিয়ে তামাবিলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৪নং বাংলাবাজার রাংপানি লক্ষীপুর এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকারটি মহাসড়কের পাশে খাদে পানিতে পড়ে যায়। এতে চারজনের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন- জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের (নিজপাট) ইউনিয়নের জৈন্তাপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় স্কুল সংলগ্ন তোয়াসি হাটির বাসিন্দা বনদিপ পালের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা নেহাল পাল (২৫), কমলা বাড়ির গ্রামের জামাল আহমদের ছেলে জুবায়ের আহসান (২৪), বড় পুকুুরপাড় পানিয়ারা হাটির আরজু মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান তমাল (২২) ও জাঙ্গাল হাটির হারুনুর রশিদের ছেলে আলী হোসেন সুমন (২৩) মৃত্যুবরণ করেছেন।

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদ জানান, জৈন্তাপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দলের সহযোগিতায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদেরকে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত ডাক্তার দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুইজনকে আশংঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তারা মারা যান।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *