জগন্নাথপুরে মটর সাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত রিপনের পরিবারের দাবী এটি পরিকল্পিত হত্যা

Uncategorized
শেয়ার করুন

জগন্নাথপুর  সংবাদদাতা : জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের সূবর্ণ কুড়া নামক স্থানে মটর সাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত কলেজ ছাত্র রিপন মিয়ার পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবী মটর সাইকেল দুর্ঘটনায় রিপন মারা যায়নি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। গত রবিবার (২৯মার্চ) জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী নোয়াগাঁও গ্রামের আসকর আলীর ছেলে রিপন মিয়া মটর সাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সরজমিনে গেলে এলাকাবাসীর ও রিপন মিয়ার পরিবারের সাথে আলাপ করে জানাযায় এর মূল রহস্য। নিহত রিপনের চাচা আপ্তাব উদ্দিন জানান একই এলাকার সুনু মিয়ার পুত্র মিরজু মিয়া পরিকল্পিত ভাবে মটর সাইকেল দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়ে আমার ভাতিজা রিপন মিয়াকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। তিনি জানান গত ২৬ মার্চ আমাদের এলাকার আকিবুলের পরিবারের সাথে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মিরজু মিয়ার কথা কাটাকাটি হলে মিরজু মিয়া উত্তেজিত হয়ে আকিবুলের বাড়িতে হামলা করে লোকজনদের মারধর করে।  রিপন মিয়া এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় মিরজু মিয়া আমার ভাতিজা রিপনকে হত্যা করছে বলে আমার ধারনা। এছাড়া মিরজু মিয়ার পরিবারের সাথে আমাদের পরিবারের দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। এলাকাবাসী জানান, বিগত প্রায় ১৬বৎসর পূর্বে মিরজু মিয়া তার  স্ত্রীকে হত্যা করে কুশিয়ারা নদীতে লাশ  ফেলে দেয়। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হওয়ার পর আদালত তাকে যাবত জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। কারাদন্ড শেষে বাড়িতে আসার পর মিরজু মিয়া বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। সে অত্যান্ত উগ্র এবং চরিত্রহীন লোক। তার একাধিক বিয়ে রয়েছে। যে স্থানে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা কবলিত হয়েছে সেখানে কোন যানবাহন বা লোকজনের যাতায়াত ছিলনা। নিহত রিপনের পিতা আসকর আলী জানান, ঘটনার দিন ২৯ মার্চ রবিবার সকাল ১১টায়  মিরজু মিয়া একটি মোটর সাইকেল নিয়া আমাদের বাড়ির সামন থেকে আমার ছেলে রিপন মিয়াকে মোটর সাইকেল তুলে নিয়ে যায় । বেপরোয়াভাবে মটর সাইকেল চালাইয়া  ঘটনাস্থলে যাওয়া মাত্রই আমার ছেলে রিপন মিয়াকে কৌশলে মোটর সাইকেল থেকে রাস্তার বাহিরে ফেলে দেয়। খবর পেয়ে আমি এবং আমার  ভাই আপ্তাব উদ্দিন ঘটনাস্থলে পৌছিয়া দেখতে পাই  আমার ছেলে  রাস্তার বাহিরে পড়ে আছে। আমরা তার কাছে গেলে  মিরজু  মিয়া তাকে মটর সাইকেল থেকে পেলে পাথর দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায় বলে আমাদের জানান।  পরে আমি এবং আমার ভাই আমার ছেলের ডান কানে আঘাত, নাক ও মূখ দিয়া রক্ত বাহির হইতেছে দেখিয়া সাথে সাথে চিকিৎসার জন্য সিলেট নিয়ে যাওয়ার পথে ইনাতগঞ্জের করিমপুর নামক স্থানে পৌছা মাত্রই আমার ছেলে রিপন মিয়ার মূত্যু হয়। রাকাত আলীর স্ত্রী রেনু বিবি জানান, আমি রানীগঞ্জ বাজার থেকে বাড়িতে আসার সময় মিরজু মিয়াকে বেপরোয়াভাবে মোটর সাইকেল চালাইতে দেখিয়াছি এবং  রিপন মিয়া আস্তে মোটর সাইকেল চালানোর জন্য মিরজু মিয়াকে অনুরোধ করে। নিহত রিপনের ভাই সুমন মিয়া জানান আমাদের ধারনা পূর্ব শক্রতার জের ধরে মিরজু মিয়া আমার ভাইকে মটর সাইল দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়ে হত্যা করেছে। আমরা মিরজু মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখি মিরজু মিয়ার স্ত্রী এবং পরিবারের লোকজন ঘরে নাই এবং ঘরটি তালাবদ্ধ। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে নিহত রিপনের পরিবার জানিয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী জগন্নাথপুর থানার এস আই অনিক চন্দ্র দেব জানান, নিহতের ময়না তদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এটি পরিকল্পিত হত্যা না কি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা বলা যাচ্ছেনা।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *