চেয়ারম্যান নুনু মিয়া এসেছিলেন সরবে, চলে গেলেন নিরবে

বিনোদন বিশ্বনাথ সিলেট
শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের পঞ্চম নির্বাচন ২০১৯সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ নির্বাচনে বিজয়ী হন যুক্তরাজ্য প্রবাসি এসএস নুনু মিয়া। তার সাথে প্রদিদ্ব›িদ্বতা করেছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী। নুনু মিয়াকে বিজয়ী করতে তার পক্ষে এসেছিলেন, দেশবরেণ্য অর্থনীতিবিদ সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা নুনু মিয়াকে নির্বাচিত করতে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পর নুনু মিয়া চেহারা অনেক পরিবর্তন হয়ে যায়। তাকে একটি সিন্ডিকেট ঘিরে ফেলে।

২০২২সালে বন্যার সময় নুনু মিয়া একটি কলাগাছের ভেলায় (ভুরায়) উঠে একজন মুরব্বিকে দিয়ে ঠেলা দেয়ার ঘটনা হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। তার পর একজন ভিক্ষুকের ছবি দিয়ে লিখেছিলেন, ‘ফকির এই দরবেশ তার জন্য দোয়া করছেন, বিশ্বনাথ বাসির জন্য অনেক ভাল কাজ করছেন। নুনু মিয়ার ফেসবুক আইডির নামও ছিল, জননেতা নুনু মিয়া। তিনি নিজে নিজেই জননেতা পরিচয় দিয়েছিলেন। আওয়ামীলীগ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে ঘনিষ্টতা ও সখ্যতা থাকায় বড় বরাদ্দও পেয়েছিলেন। কিন্তু নুনু মিয়া তিনি নিজে যেমন ব্যক্তিগত ইমেইজ ধরে রাখতে পানেননি তেমনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারটিকে চরম বিতর্কিত করেছিলেন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে এবং পানিতে আর্সেনিক থাকায় সরকার সারা দেশের ন্যায় এ উপজেলায়ও গভীর নলকুপ স্থাপনের বরাদ্ধ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার আশপাশে থাকা লোকজনকে দিয়ে ৫০হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত প্রতিটি নলকুপে টাকা আদায় করায় চরম সমালোচনার মুখে পতিত হন। প্রতিদিন ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে নানা কঠুক্তি ও কঠোর সমালোচনা হলেও তিনি টু শব্দ করেননি।

নুনু মিয়া চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর কোন ইউনিয়নে রাস্তাঘাটের সমস্যা ব্রিজ কালভাট কৃষি শিক্ষা সমস্যার সমাধানে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা য়ায়নি। এমন কি তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মিশতেও নারাজ ছিলেন। ৪দলীয় জোট সরকারের আমলে গুলশানে গ্রেনেড হামলায় আহত হলে নুনু মিয়ার দেশ বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি ঘটে। আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার পক্ষে অবস্থান নিয়ে ছিলেন এবং লন্ডন থেকে লেবার পার্টি উনাকিং এসপি এসে নুনু মিয়াকে মামলা থেকে অব্যহতি দিতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। এটাই ছিল নুনু মিয়ার রাজনীতির উত্থান। জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও তিনি সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যও হয়েছিলেন। কিন্তু নুনু মিয়া একবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অতি লোভে ফাঁদে পড়ে সব হারালেন।

বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের কাসিমপুর গ্রামের বাসিন্দা অনেক ডাক ঢোল পিটিয়ে মহানন্দে চেয়ারম্যান হলেও দিবায়ের সানাই করুণ সুরে নিরবে বাজিয়ে বিদায় নিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে। যাওয়ার বেলা তাকে একটি বিদায় সংবর্ধনা ও তাকে কেউ দেয়নি। লোকজন বলছেন আর আসিওনা ফিরে, বাসিয়া নদীর তীরে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *