নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বনাথ উপজেলার চাউলধনী হাওরের কৃষকের ভূমির সাথে সরকারি খাস ভূমির সীমানা নির্ধারন কার্যক্রম গতকাল ৬ ফেব্রæয়ারী রবিবার শুরু হওয়ার কথা ছিল। সিলেট জেলা প্রশাসনের নিদের্শে বিশ্বনাথ উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার জীবনচন্দ্র দাস, রামপাশা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা সত্যপ্রিয় ভট্টাচার্য, দশঘর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা জামিল আহমদ সরেজমিনে চাউলধনী হাওরে যান। তারা মহামান্য হাইকোর্টে রীট আবেদনকারী ও এলাকার কৃষকদের সাথে আলোচনাক্রমে চাউলধনী হাওর জলমহাল গ্রæপের কিছু হাওরের স্থান ঘুরে দেখেন এবং কিভাবে সীমানা নির্ধারনী কার্যক্রম সম্পুর্ণ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেন। প্রায় কয়েক শতাধিক কৃষক, রীট আবেদনগণ ও প্রাক্তন উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান সরকারি কর্মকর্তাদের জানান, সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত প্রতিটি দাগের সাথে কৃষকদের ভূমির সীমানা চিহ্নিত করণ করা হলে, আজীবনের জন্য বিরোধ নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। কর্মকর্তারা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনাক্রমে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ও মানচিত্র দেখে পরবর্তীতে সরাসরি সীমানা নির্ধারনের কাজ শুরু করবেন বলে আশ্বাষ দেন। এমতাবস্থায় বহুল প্রত্যাশিত সীমানা নির্ধারনী কাজ রবিবার সরেজমিনে শুরু করা যায়নি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রীট আবেদনকারী মোঃ আবুল কালাম।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, চাউলধনী হাওরের মধ্যে প্রায় ১০হাজার একর ভূমি রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ১৭৮.৯৮একর খাস ভূমি সরকারের পক্ষে লীজ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু লীজ গ্রহণকারী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি একটি বাহিনীর হাতে সাবলীজ দিয়ে গত দুই যুগ ধরে হাওরটিকে জবরদখল করা হচ্ছে। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দশঘর মৌজার চৈতননগরস্থ সেনাপতি বিল সরকারের লীজভূক্ত নয়। তবুও সাবলীজ গ্রহিতা সাইফুল বাহিনী প্রায় ২০ একর ভূমি জবরদখল করে খনন করেছে। মৌলভীগাঁও গ্রামের জামে মসজিদের ৪৫শতক ভূমিও সাবলীজ গ্রহিতার দখলে রয়েছে। মৌলভীগাঁও মৌজার আড়–চাড়– বিলে মাত্র ৬১শতক জলাশয় লীজ ভুক্ত থাকলেও প্রায় ৫ একর ভূমি দখল করা হয়েছে। দশপাইকা মৌজার মৌখালী নামক বিলটি লীজ না থাকলেও প্রায় ১৫ একর কৃষকের জলাভূমি সাবলীজ গ্রহিতা সাইফুল মাছের জন্য বিক্রি করে দেয়।
তাছাড়া গরীব কৃষকের খননকৃন্ত ১৫০টি মতো পুকুর সাবলীজ গ্রহিতার দখলে রয়েছে। চৈতননগর এলাকায় মুচি সম্প্রদায়ের বিজয় রবি দাস নামক একজন ভূমিহীনকে সরকার খাস জমি চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদান করলে, সেই ভূমিও সাইফুল ও তার বাহিনী দখল করে নিয়েছে। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে অসহায় নিরিহ কৃষকদের ভূমি, পুকুর ও জলাশয় দখল করে হয়রানী করা হচ্ছে। অবশেষে কৃষকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠেন এবং মহামান্য হাইকোর্টের একটি রীট ফি পিটিশন দাখিল করেন। আন্দোলনরত কৃষকদের বিরুদ্ধে একটি মহল অপপ্রচার করেছিলেন যে, কৃষকরা নাকি ৫শতটি সরকারি পুকুর দখল করে রেখেছিলেন। কিন্তু এসব অপপ্রচারের কোন সত্যতা অনুসন্ধান করে পাওয়া যায় নি। মহামান্য হাইকোর্টের নিদের্শনা মতে, চলতি শীত মৌসুমে সীমানা নির্ধারনের কাজ সম্পন্ন করা জরুরী বলে কৃষকরা দাবী করেছেন।