নোবেল করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের মধ্যে আক্রান্তের আতঙ্ক না থাকলেও এর প্রভাবে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে সমস্যা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীন দেশের বাৎসরিক ছুটি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। আর একই সময়ে সনাক্ত হয়েছে নতুন এই ভাইরাসটি। ফলে আলোচিত সময়ে ব্যবসায়ীক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও তা কতদিন পর্যন্ত গড়ায় তাই চিন্তার বিষয়।
বিশ্বজুড়ে চলতি ইস্যুতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে একটি জরুরী আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছ। যাতে নগরিক সুরক্ষা ও বাণিজ্য বিষয় গুরুত্ব পাবে। এছাড়া সরকার পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় সতর্ককতা জারির উদ্যোগের কথাও বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, আগামী ১২ ও ১২ ফেব্রুয়ারি চীনের হাংজু প্রদেশে এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করেছ চীন সরকার।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠকেও ভাইরাসটির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন।
রাজধানীর পলওয়েল সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান আগামী নিউজকে বলেন, ‘যে সময়ে করোনাভাইরাস চীনে সনাক্ত হয়েছে, তখন দেশটির ‘চন্দ্র নববর্ষে’র ছুটি চলছে। এসময় সাধারণত কলকারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে দেশটির সরকার এই ছুটির সময় বাড়িয়েছে। ফলে চাহিদার পরিমাণে পণ্য উৎপাদন ও আমদানিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সঠিক সময়ে পণ্য আসবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।’
আগামী নিউজের সঙ্গে কথা হয়েছে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাসিট্রজের (বিসিসিসিআই) ব্যবসায়ী নেতার সঙ্গে।
ব্যক্তিগত আগ্রহ না থাকায় তার নাম উল্লেখ করা হচ্ছে না। বিসিসিসিআই এর ওই নেতা বলেছেন, ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে, বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। আশাকরি এ থেকে আমরা রক্ষা পাবো। এর আগেও সার্স নামে চীনে এ ধরনের ভাইরাস দেখা গেছে। সে দেশের সরকার যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছে। এবারও তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের সরকারও প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। ব্যবসার বিষয়ে আমাদের তেমন আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। বাণিজ্যিক সুরক্ষার বিষয় দুই দেশের সরকার কাজ করবে এটাই আশা করছি।’
তিন বলেন, ‘চীনের নববর্ষের ছুটি চলছে। যে কারণে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের ব্যবসায়ীরা আগেই তাদের বাণিজ্যিক আদেশ সম্পন্ন করেছেন। এখন বিষয় হচ্ছে, পণ্য তৈরি ও নিদিষ্ট স্থানে সময় মতো পৌঁছাবে কি না। বিষয়টি একটু চিন্তার। যদি ভাইরাসটির ভয়াবহতা দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে ব্যবসায় কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হবে।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি চীনের উহান শহরে প্রথম এ ভাইরাস সনাক্ত হয়। সোমবার পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কমপক্ষে ৮০ জন ব্যক্তি মারা গেছেন। এছাড়া দেশটিতে অন্তত ৩ হাজার ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছে।
ইতিমধ্যে, ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সতর্ক ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমান, নৌ এবং স্থল বন্দরে বসানো হয়েছে স্বাস্থ্য পরীক্ষার যন্ত্র থার্মাল স্ক্রিনিং। চীন থেকে আসা সব বিমানযাত্রী এবং পণ্যকে এই বিশেষ পরীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে।
সুত্র, আগামীনিউজ