ডেক্স রিপোর্ট : সিলেটের উত্তর বিশ্বনাথ আমজদ উল্লাহ ডিগ্রি কলেজের পুঞ্জিভুত অনিয়ম এখন থলে থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দীর্ঘদিন পূর্বে কলেজের নামকরণ নিয়ে জটিলতা শেষ হওয়ার পর কলেজের পরিবেশ শান্ত ছিল। কিন্তু বর্তমানে কলেজে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিদ্যমান।
বিভিন্ন সুত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, কলেজে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে ১০০ জনের মত ডিগ্রি ক্লাসের শিক্ষার্থী। এইচএসসির ক্লাস হলেও ডিগ্রি ২য় ও ৩য় বর্ষে তেমন কোন ক্লাস হয়নি বা শিক্ষকও নেই। শিক্ষার্থীদের বেতন, সেশন ফি সহ স্টাফ নিয়োগ, অডিট কমিটি গঠন, গভর্নিং বডি গঠনে নানা অনিয়ম দূর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে । কিছুদিন পূর্বে কলেজ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পিকনিকে যাওয়া হয়েছিল। এতে ৩ জন শিক্ষিকা পিকনিকে না যাওয়ায় কলেজ অধ্যক্ষ তাদেরকে শোকজ করেন। পিকনিকে খরছের টাকা উত্তোলনের দায়িত্ব দেয়া হয় অধ্যক্ষের প্রিয়ভাজন এক ছাত্রকে। উক্ত ছাত্র পিকনিকের আগের দিন পর্যন্ত টাকার কোন হিসাব নিকাশ না দেয়ায় একজন শিক্ষক তার উপর নাখোশ হন। এতে অধ্যক্ষ অতি কৌশলে ওই শিক্ষার্থীকে দিয়ে বিভিন্ন দাবি-দাবার কথা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জনের সুযোগ করে দেন। এমনকি যারা পিকনিকে যাননি তাদেরকে থ্রেটও করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, একজন মহিলা শিক্ষিকার সাথে কলেজ অধ্যক্ষের ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকায় বিভিন্ন সময় শিক্ষক শিক্ষার্থীরা কানাঘুষা করে থাকেন। অধ্যক্ষ ঐ শিক্ষিকার কথায় নাকি উঠবস করে থাকেন। সুত্র মতে আইসিটির একজন শিক্ষিকা জুনিয়র হয়েও সিনিয়র দাবি করায় জটিলতার সৃষ্টি হলে সিনিয়রকে দায়িত্ব প্রদানে মন্ত্রনায়ল থেকে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ তাতে কোন কর্ণপাত করেননি। নিজের আতœীয় স্বজনকে বিধি বর্হিভুতভাবে নিয়োগ দেয়ায় কলেজে সমস্যা সৃষ্টির বড় একটি কারন। ৩ মার্চ মঙ্গলবার শিক্ষর্থীরা ক্লাস করতে গেলে কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদরেকে বাঁধা নিষেধ করে ক্লাস বর্জনে বাধ্য করে এমন অভিযোগও রয়েছে। অন্য শিক্ষকরা বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষের সাথে কথা বললে তিনি তেমন কোন গুরুত্ব দেননি। কলেজে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সংবাদ শুনে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মুলত অধ্যক্ষের সাথে শিক্ষকদের বিরুধের কারনে কিছু ছাত্র কলেজ ক্যাম্পাসে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জনৈক শিক্ষক জানান, আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। কয়েকজন শিক্ষক এ বিষয়ে থানায় গিয়েও মৌখিক অভিযোগ করেছেন। এখানে বিধি মোতাবেক অডিট কমিটি সহ কোন কমিটি গঠন হয়নি। সকল অনিয়ম এখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে। এক ব্যক্তির কর্তৃত্বের কারনে প্রতিষ্টানটি অনেক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উস্কানি দেয়া হচ্ছে। এসব কাম্য হতে পারেনা। গভনিং বডির সভাপতি এ্যাভোকেট শাহ্ মোসাহিদ আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সম্পূর্ণ বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন এবং আগামি শনিবার গভর্নিং বডির জরুরী সভার আহবান করা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংশা করা হবে।
কলেজ অধ্যক্ষ নেছার আহমদ তিন শিক্ষিকাকে শোকজের কথা স্বীকার করে বলেন, আইসিটি শিক্ষিকা সিনিয়র দাবি করা সঠিক এবং বেতন ও সেশন ফির রশিদ শিক্ষার্থীরা পায়নি এমন অভিযোগ কোন শিক্ষার্থী তার নিকট করেনি।