‘আব্বু আমাকে ৪ জন অন্ধকার ঘরে আটকে রেখেছে’

অপরাধ সিলেট
শেয়ার করুন

ডাক ডেস্ক : সিলেটে মোবাইল ফোন বিক্রির কথা বলে ঘর থেকে বের হয়ে বাসায় ফিরেনি মো. ইয়ামিন আরাফাত হামিম (১৯)। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে দক্ষিণ সুরমার কদমতলীতে মোবাইল বিক্রি করবে বলে ঘর থেকে বের হয় হামিম। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ নেই।

এ ঘটনায় বুধবার (১১ অক্টোবর) হামিমের বাবা মোগলাবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোগলাবাজার থানার ডিউটি অফিসার এসআই সখিনা আক্তার।

নিখোঁজ হামিম দক্ষিণ সুরমার শ্রীরামপুর শেখপাড়া এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মো.ইয়ামিন আরাফাত হামিম (১৯) চলতি বছর শাহপরাণ সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পাশাপাশি অনলাইনে আবেদন ও বিকাশ এজেন্টে হিসেবে ব্যবসা করতো। ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্রীরামপুরস্থ তাদের বাসা থেকে বের হয়। এসময় তার মাকে মোবাইল ফোন বিক্রি করতে কদমতলী যাচ্ছে বলে জানায়। পরবর্তীতে রাত ১০টা ৩ মিনিটের দিকে বাবলু নামে তার এক বন্ধুকে কল দিয়ে জানায় তাকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যাবে না। কারণ ফোন বিক্রি করে দেবে। তারপর থেকে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাতেই হামিমের বাবা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে বিষয়টি অবগত করেন। বুধবার সকালে থানায় ছেলে নিখোঁজ বলে সাধারণ ডায়েরি করেন।

হামিমের বাবা জালাল উদ্দিন জানান, রাত থেকে ছেলেকে অনেক খোঁজাখুজি করছি, কোথাও কোনো সন্ধান পাচ্ছি না। ছেলের সন্ধান না পাওয়া তার অসুস্থ মা বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। ছেলে কোথায় আছে কেউ কিছু বলতেও পারছে না। আমার ছেলেকে বোধহয় অপহরণ করা হয়েছে। কারণ রাত ১০টা ১৩ মিনিটের পর থেকে আর তাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘বুধবার দুপুর ২টা ২৩ মিনিটের সময় হামিমের মোবাইল থেকে আমাদের ফোনে দু’বার কল আসে। প্রথমবার ১০ সেকেন্ডের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আরও ১০ সেকেন্ড পর আরেকটি কল আসে। তখন তার সাথে ৩৬ সেকেন্ড কথা বলি।’

এসময় আমার ছেলে আমাকে বলে, ‘আব্বু আমি কিছুই দেখতেছি না। আমাকে ৪জন একটি অন্ধকার ঘরে নিয়ে এসে আটকে রাখছে। আমাকে বলছে এখানে পঁচে মরবো’। এই কথা বলে আমার ছেলের ফোন কেটে দেয়।

এক প্রশ্নের জবাবে জালাল উদ্দিন বলেন, আমার কারো সাথে কোনো শত্রুতা নেই। আমার ছেলেও কোনো ধরনের নেশাদ্রব্য পান করে না। ছেলের সাথে কারো কোনো শত্রুতা থেকে থাকলে তা আমার জানা নেই। ব্যবসা করে হিসেবে তার ফোনে লাখ খানেক টাকা আছে।

তিনি আরও জানান, তার ছেলে দক্ষিণ সুরমার শাহপরাণ সরকারি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ছেলেকে খুঁজে না পাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা। হারানোর সময় তার পরনে ছিল কালো টি শার্ট, পরনে জিন্স প্যান্ট, গায়ের রং শ্যামলা, মাথার চুল কালো, উচ্চতা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি।

এ ব্যাপারে মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাঈন উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন তথ্য আমাদের কাছে আছে। আমাদের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *