আকাশ সংস্কৃতি গিলে খাচ্ছে দেশের যুবসমাজ

জাতীয় সারাদেশ
শেয়ার করুন

এএইচএম ফিরোজ আলী-
সংস্কৃতি শব্দের আভিধানিক অর্থ চিৎপ্রকর্ষ-মানবীয় বৈশিষ্টের উৎকর্ষ সাধন। শাব্দিক অর্থ-কৃষ্টি, সংস্কার, বিশ্বাস। সাধারণ অর্থে, মানব সভ্যতার, যাবতীয় কর্মকান্ড সংস্কৃতি। অল্প কথায়, মানব সৃষ্ট সব কিছু নিয়ে সংস্কৃতি। মানুষের জীবন-প্রণালির আরেক নাম সংস্কৃতি। ব্যাপক অর্থে, মার্জিত রুচিশীল সব মানবীয় কর্মকান্ড সংস্কৃতি। মানুষ যুগ-যুগান্তর ধরে সমাজ, সভ্যতা, মূল্যবোধ, নীতি-নৈতিকতা, চাল-চলন, লালন-পালন করে সুন্দর পথে যা কিছু তিলে তিলে জমায়েত করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ছড়ায় তাহাই সংস্কৃতি। ১৯২২সালে ঈঁষঃঁৎব এর প্রতিশব্দ ‘সংস্কৃতি, প্রথম বাংলায় ব্যবহার শুরু হয়। সংস্কৃতি-কৃষ্টি হচ্ছে, জ্ঞান-বিশ্বাস, নৈতিকতা, ভদ্রতা-ন¤্রতা, শালিনতা, আচার-ব্যবহার, আইন, শিক্ষা, শিল্প, রাজনীতি দ্বারা মানুষের পরিচালিত জীবন-কর্মই কালচার বা সংস্কৃতি।
সাহিত্য-সংস্কৃতি সমাজের ‘অবিচ্ছেদ্য, অংশ। সাহিত্য সংস্কৃতিকে সমাজের দর্শন বলা হয়। বাংলার সংস্কৃতিতে ছিল, একসময় মানুষের নাড়ীর সম্পর্ক। অভিনয়, চিত্রকলা, কারুকলা, স্থাপত্য সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সৃজনশীলতা মানুষ তাঁর চিরায়ত সংস্কৃতিকে প্রচার-প্রকাশের মাধ্যমে ধরে রাখতে চায়। এ কারনেই সংস্কৃতি তার সমাজের মূল পারিচয় ও সমাজ সংস্কৃতি সবসময় চলমান হওয়ায় মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা বিরহ মিলনের গল্প কথা, সব সময় কালান্তরে বিদ্যমান। সমগ্র বাঙালি জাতির চিন্তা-চেতনা, ভাবধারা ও কর্মধারার গৌরবসম প্রতিচ্ছবি হলো বাঙালির সংস্কৃতি। জাতির আনন্দময় অবচেতন মনের সামগ্রীক প্রয়াস নিরবচ্ছিন্ন সাধনার হাজার বছরের সবশ্রেষ্ট ফসল সংস্কৃতি। সমাজে সংস্কৃতির মৃত্যু হলে জাতীয় জীবন ও সভ্যতার মৃত্যু হয়ে যায়।
সংস্কৃতির বিপরীত শব্দ, অপসংস্কৃতি। অপসংস্কৃতি শব্দটা মারাটা শব্দ থেকে এসেছে। সুনিতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বাংলায় কালচার অর্থে সংস্কৃতি শব্দটা প্রস্তাব করলে, করিশুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রস্তাব অনুমোদন করেন। আগে বাংলা শব্দটি ছিল, কালচার অর্থে, রবীন্দ্রনাথ কৃৃষ্টি শব্দটি কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত মনে করায় কালচার অর্থে সংস্কৃতি ছিল উপযুক্ত। উপ-মহাদেশীয় সংস্কৃতি দ্বারা বাঙালি মনিষিদের বিশিষ্ট্যতায় এবং হৃদয়াভিব্যক্তি অনন্যতায় স্বতন্ত্র বাংলা সংস্কৃতিতে রূপান্তরিত হয়েছে। অসস্ট্রিক-দ্রাবিড় নয়, এখানে আর্য এবং শক হুন (মধ্য এশিয়ার অশ^ারোহী যাযাবর জাতি) দল পাঠান-মোগল ইংরেজ বাঙালিকে তাঁর নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে সরিয়ে রাখতে পারেনি। অনবদ্য বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতির অনন্যতায় ভরপুর।
 একদা গ্রাম ছিল, বাঙালির সংস্কৃতির প্রাণ কেন্দ্র ও প্রাণভূমি। কৃষি প্রাণ গ্রামীণ মানুষের আনন্দ-বেদনা, রীতি-নীতি, ধর্মীয় সামাজিক পরিবেশ সংস্কৃতি লালন-পালন ও পরিধান করেছে। ‘সদা সত্য কথা বলিবে, মিথ্যা বলা মহাপাপ, এই সংস্কৃতি বাঙালিকে মানবীয় গুনের শ্রেষ্ট ধারক ও বাহকের খ্যাতি দিয়েছিল। হিন্দু মুসলিম, বৌদ্ধ খ্রিষ্টান নৃগোষ্ঠিসহ সবাই মিলে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে একসাথে ধর্ম-কর্ম পালন করে সম্প্রীতির ইতিহাসে বিশ্বে অনেক সুনাম অর্জন করেছে। কিন্তু হাজার বছরের অর্জিত জাতির সুনাম আকাশ সংস্কৃতি বা আধুনিক নগ্ন সংস্কৃতির থাবায় অশ্লিলতার কবলে পড়ে ক্ষয় হচ্ছে মুল ‘সংস্কৃতি’।
বঙ্গ-বাঙ্গালা- বাংলার এ ভূখন্ডে জনসমষ্টির ধর্ম-কর্ম শিক্ষা মায়ের ভাষা বাংলা রক্ষা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐক্যের চেতনা বাঙালিকে, বিশ্বে শ্রেষ্ট মর্যাদার আসনে বসিয়ে বীর বাঙালির উপাধি লাভ করে দেয়। কিন্তু স্বল্প সময়ে অপসংস্কৃতি, ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের নৈতিক মুল্যবোধের অবক্ষয় ও শিষ্টাচারে পচন ধরিয়েছে। অপসংস্কৃতির এমন প্রভাব দেশ ও জাতির ভয়ানক ক্ষতির কারন। অপসংস্কৃতি মানুষকে পশুতে পরিণত করে। জাতি, সমাজের স্বক্রিয়তা আতœশক্তি নষ্ট করে, পথে বসাতে বেশি সময় লাগেনা। অপসংস্কৃতি সভ্যতার বিকাশ নয়, ধবংস অনিবার্য। সংস্কৃতি নামের অশ্লিলতা তারুন্যের জীবন নষ্ট ও কলঙ্ককিত করছে।
সংস্কৃতিতেই বাঙালির জন্ম। সংস্কৃতি বাঙালির চেতনার হাতিয়ার। বাংলা সাহিত্যে বাঙালির জীবনাচারের এক সংস্কৃতির ভান্ডার। বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুলের মানবতাবাদী অমোঘবাণী, হিন্দু ওরা মুসলিম?, ঔই জিজ্ঞাসে কোনজন? কান্ডারী বলো, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার, বিদ্রোহী কবি’র সেই বিস্মকর কবিতায় ‘লাথি মার ভাঙ্গরে তালা, যতসব বন্দি শালা, আগুন জ্বালা আগুন জ্বালা। বিশ^কবি রবীন্দ্রনাথঠাকুরের বিখ্যাত গান (জাতীয় সঙ্গীত) আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসী, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় এর বিখ্যাত কবিতা ধন ধন্য পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা, তাহার মাঝে আছে দেশ সকল দেশের সেরা ‘এমন দেশটি কোথাও খোঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানী সেজে আমার জন্ম ভুমি,। মরমি কবি হাসন রাজার, ‘পরের জায়গা পরের জমি, ঘর বানাইয়া আমি রই, আমি তো সেই ঘরের মালিক নই,। শাহ আব্দুল করিমের, ‘মাটিরও পিঞ্জিরা সোনার ময়নারে, তুমারে পুষিলাম কত আদরে, অতি চালাকের গলায় দড়ি, আগে হাঁটলে চুরে পথ পায়, নাচতে না জানলে উঠান তেড়া এসব পংক্তী ও প্রবাদ-প্রবচন বাঙালি সংস্কৃতিকে প্রাণবন্ত ও সমৃদ্ধশালি করে রেখেছে। বর্তমানে ডিস্কো ডেনসার, ইংলিশ, হিন্দি, উর্দু গান ও উলঙ্গ নৃত্বের নামই সংস্কৃতি। ভয়ানক ইন্টারনেট মুল সংস্কৃতিকে গ্রাস করেছে। তরুণ তরুণীদের পোষাক, অলংকার পরিধান দেখে মনে হয় লিঙ্গ পরিবর্তনের প্রতিযোগীতা চলছে। ছেলেদের হাতে ব্রেসলেইট, চুড়ি, গলায় চেইন, কানে দোল, পেন্টের দুই হাঁটু ছেড়া, মাতার চুল মেয়েদের মত বেধে রাখা ইত্যাদি। মেয়েরা টাইট জিন্স পেন্ট, হাতে চুড়ি নয় ঘড়ি, মোবাইল, মেয়েলী অংলকার ছাড়াই রাস্তাঘাটে ছেলেদের মত বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করছে। তরুণ-তরুণীরা দিবানিশি নামি দামি মোবাইলে হাওয়া সংস্কৃতির অশ্লীলতা পর্ন্যগ্রাফি দেখছে। গ্রাম-শহরের রাস্তার মোড়ে যুবকরা অশ্লীলতা দেখে সময় কাটাচ্ছে। মোবাইল অশ্লিলতায়, পরকিয়া, বাল্যবিবাহ কিংবা পালিয়ে গিয়ে বিবাহের প্রবনতা বাড়ছে। পাশাপাশি বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ভয়ংকর। দারুণ ইন্টারনেট অনেক শিশু কিশোরের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে। অভিভাবকরা শিশু কিশোরদের বিনোদন বা আদর করে নামি-দামি মোবাইল হাতে তুলে দিয়ে শিশুদের কপালে কুড়াল মারছেন। শিক্ষা প্রতিষ্টানে ক্লাসে বসেই অশ্লীলতার প্রদর্শন করছে শিশু শিক্ষার্থীরা। সারা রাত জেগে মোবাইলে অশ্লীল ছবি আদান প্রদান করে নানা অপকর্মে জড়িয়ে তরুণ-তরুণীরা যৌন শক্তি হারাচ্ছে। এমন ভয়াবহ কর্মকান্ডে নিরবে তরুণ সমাজ ধবংস হতে যাচ্ছে। এমন অবস্থা যেন, কারো নজরে নেই। সভ্যতা মানবতা ও তারুণ্য শক্তির ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকার।
  অপ্রিয় হলে সত্য যে, কিছু লোক নতুন ফ্যাশন বা আধুনিক সংস্কৃতির নামে হাফপেন্ট পরে শহর বা বন্দরে ঘুরে বেড়ান। আবার কেউ কেউ ছেলে সন্তান নিয়ে স্বপরিবারে হাফপেন্ট পরতে দেখা যায়। লোকে এমন পরিবারের নাম দিয়েছে ‘হাফপেন্ট পরিবার’। এসব হঠাৎ বড় লোক বা ভদ্রলোক পরিবারের হাব-ভাব দেখে মনে হয় তারা যেন ইউরোপের কোন দেশে বসবাস করছেন। মুসলিম এদেশে, গেল বিশ্বকাপে ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারের চুল কাটা দেখে মুহুর্তের মধ্যে বাংলাদেশের চুল কাটার ডিজাইন বদলে যায়। শিশু কিশোররা বিদেশি তারকার ডিজাইনে চুল কেটে যেন হিমালয় জয়ের তৃপ্তি পায়। কেউ কেউ মাথার চুল কেটে ম্যাপ, ইংরেজি অক্ষর বা ‘লাভ ইউ’ লিখতে দেখা যায়। মাথায় চুলের উপর উল্টো দিকে চশমা তো আছেই।
একসময় এদেশে ঘেটুগান, যাত্রাগান, হালতি গান ও উরুসের নামে মদ গাজা সেবন ছিল অশ্লীলতার প্রথম ধাপ। নব্বই দশকে ডিস এন্টিনার মাধ্যমে আকাশ সংস্কৃতি অনুপ্রবেশ করে এদেশে। বর্তমানে ইন্টারনেটের কারনে অধিকাংশ  তরুণ-তরুনী উগ্র জীবন যাপন, উলঙ্গ নৃত্য নেশা জাতীয় দ্রব্য পানাহার, সেবন অবাধে গ্রহণ করছে। লেখা-পড়ার সময় কাটে ইন্টারনেটের কুরুচিপূর্ণ ছবি দেখে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শারীরিক ব্যায়াম হয় না। জাতীয় সঙ্গীত কন্ঠে নয়, মোবাইল দিয়ে বাজাঁনো হয়। ছাত্র, শিক্ষক ছোট বড়দের মান্যতা, আদবকায়দা বা শিষ্ট্রাচার উধাও হচ্ছে। নব্য ধনিরা অশ্লীলতাকে ভদ্রতা শালিনতা মনে করছে। মানবতাবাদি লোকজন বা শিক্ষকরা অশ্লীলতা বা নগ্নতার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কোমলমতি শিশুদের অশ্লীতা বন্ধে কঠোর হলে উল্টো বিপদে পড়ে যান। শিক্ষা প্রদ্ধতি থেকে শাসন ব্যবস্থা উঠে গেছে। মোবাইলে আসক্ত তরুণ সমাজ এখন দৃষ্টিশক্তি ও যৌনশক্তি হারাচ্ছে। হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডাক্তারের চেম্বারে মানসিক ও চক্ষু রোগে আক্রান্ত কিশোরদের ভিড় জমে আছে।
চক্ষু বিশেষজ্ঞরা বলছেন দীর্ঘ সময় অতিমাত্রায় মোবাইলে তরুণরা আসক্ত হওয়ায় তাদের শরীরে নান জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ  হাসপাতালে সহকারি পরিচালক ফরেন্সি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাঃ সামসুল ইসলাম বলেছেন, দেশের তরুণরা মোবাইল অশ্লীলতায় আসক্ত হওয়ায় আতœহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি এ বিভাগীয় চিসিৎসক হিসেবে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখেছি । এ ব্যাপারে সর্ব প্রথমে অভিভাবকরা সচেতন হওয়া একান্ত উচিৎ। ২০ বৎসরের নিচের শিক্ষার্থীদের হাতে যেন মোবাইল তুলে  দেয়া না হয়, সেই ব্যাপারে অভিভাবকরা সচেতন হতে হবে।
 বর্তমানে পৃথিবীকে বলা হয় গ্লোবাল ভিলেইজ। ইন্টারনেটের জয়যাত্রা এখন দুনিয়া জুড়ে। ইন্টারনেটকে বাদ দিয়ে এখন একমুহুর্ত চলা যাবে না বটে, কিন্তু ইন্টারনেটের খারাপ দিকগুলো বিবেচনা করে সমাজ ও রাষ্ট্রে এসব বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। ইন্টারনেটের নেতিবাচক কর্মকান্ড পরিত্যাগ করে ইতিবাচক দিকগুলো গ্রহণে সচেতন হতে হবে। কথায় বলা হয় পাপ বা অপরাধ ঠেকাবার জন্য কিছু না করাই পাপ। আমাদের সন্তানরা নিজে নিজে চাইলেই বিকশিত হতে পারবেনা। তাদের বিকশিত বা সঠিক পথে পরিচালিত করতে অভিভাবক সমাজ ও রাষ্ট্রের ভুমিকা অতিগুরুত্বপূর্ণ। মানবতা, সভ্যতা ও নৈতিকতা সংকটে এখন তরুণ সমাজ। মনুষত্যবোধ সম্পন্ন ব্যক্তিরাই অপসংস্কৃতির হাত থেকেই যুবশক্তিকে রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। শেখ সাদি (র.) এক বিখ্যাত উক্তি করে পৃথিবীকে অবাক করে দিয়ে গেছেন। ‘সৎ সংঙ্গে সর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ-অধিকাংশ তরুণরাই সঙ্গ দোষে বিপদগামী হচ্ছে।  দেশের মুল তারুণ্য শক্তিকে রক্ষা করতে না পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করবে।তাই আসুন সবাই মিলে যুব সমাজের অবক্ষয় রোধ করি, তারুণ্যকে রক্ষায় আইন প্রনয়ন সহ সকল ধরনের সচেতনতা বৃদ্ধি করি। কারন এ দেশেটা আমাদের সকলের।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *