১০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে হবিগঞ্জে তিন কোম্পানির কাছে ওসির চিঠি

অপরাধ সারাদেশ
শেয়ার করুন

ডাক ডেস্ক : আসন্ন দুর্গাপূজা কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে অতিথিদের আপ্যায়ন বাবদ তিনটি কোম্পানির কাছে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে হবিগঞ্জের  শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি নাজমুল হক কামালের বিরুদ্ধে।- খবর সমকালের

মঙ্গলবার কনস্টেবলদের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়ে ওলিপুর স্কয়ার ডেনিমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, একই এলাকার তাফরিদ কটন মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের জিএমের (প্রশাসন) কাছে এ টাকা চান তিনি।

ওসি নাজমুল হক স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্রে লেখা রয়েছে– শারদীয় দুর্গাপূজা অসাম্প্রদায়িকভাবে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন এবং সরকারের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য শায়েস্তাগঞ্জ থানায় পূজা সংক্রান্ত কমিটি বৈঠকের আয়োজন করেছে। এতে শনিবার পূজা কমিটির সভাপতি, সহসভাপতি, কমিটির অন্যান্য সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। এ বৈঠকে আপনার উপস্থিতি একান্ত কাম্য। অনুষ্ঠানে উপস্থিতদের নাশতা, আপ্যায়নে ৩০০ প্লেট কাচ্চি বিরিয়ানি, ৩০ কেজি জিলাপি, ৩০ কেজি মিষ্টি, ৩০০ পিস দই, ৫০ বোতল পানি ও নানা পদের ফল কেনা বাবদ এক লাখ এবং আগামী ২৮ অক্টোবর কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে ৫০০ লোকের নাশতা, আপ্যায়নের জন্য ৫০০ প্লেট বিরিয়ানি, ব্যানার-ফেস্টুন, মাইকিং, ৫০০টি ফিল্ড ক্যাপ, মিষ্টি, ৫০০ পিস দই ও ৫০০ বোতল পানি কিনতে আড়াই লাখ টাকা করে চেয়েছেন ওসি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি বলেছেন, ‘থানা থেকে কাউকে এ ধরনের চিঠি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নজরে আসার পর দেখেছি আমন্ত্রণপত্রে আমার নামের স্বাক্ষর সুপার এডিটিং করা।’

এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলায় তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় শনিবার পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শামসুল হকের নেতৃত্বে কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন সদর সার্কেলের এএসপি খলিলুর রহমান ও এসপি কার্যালয়ের বিশেষ শাখার পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম।

পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চাঁদা দাবি নিয়ে থানা থেকে চিঠি পাঠানোর বিষয়ে অভিযোগ আসায় তদন্ত কমিটি করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কনস্টেবলের মাধ্যমে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়ে আপ্যায়ন বাবদ প্রতি কোম্পানির কাছে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। অনেকের হোয়াটসঅ্যাপেও একই চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রায়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে থানা থেকে এভাবে টাকা চাওয়া হয়।

হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের এজিএম (প্রশাসন) এহসানুল হাবিব বলেন, ‘শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি আমার হোয়াটসঅ্যাপে একটি আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছেন। তবে এখনও অর্থ সহায়তার বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো আলাপ হয়নি। আমরা সহযোগিতা করি। কিন্তু সবসময় থানা-পুলিশের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয় না।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *