নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বনাথের চাঞ্চল্যকর ডাবল মার্ডারের প্রধান আসামী যুক্তরাজ্য প্রবাসী ইসলামপুর গ্রামের মৃত আফতাব আলীর পুত্র প্রভাবশালী কোটিপতি সাইফুল বিশ্বনাথ থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। গত ১০ নভেম্বর সুমেল হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত তার ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। আজ ১৪ নভেম্বর রবিবার দুপুর ২টায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিশ্বনাথ থানায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী।
সাইফুলকে রক্ষার জন্য ঘটনার পর থেকে একটি প্রভাবশালী মহল চেষ্টা, তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনার পর সাইফুলকে গ্রেফতারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাড়াশী অভিযান চালালেও এক পর্যায়ে গ্রেফতার অভিযান থমকে যায়। অবশেষে গত ২১ অক্টোবর মামলার বাদী পক্ষ রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিছার একটি ১১ তলা ভবন থেকে তাকে আটক করে রমনা থানা পুলিশের সহায়তায় বিশ্বনাথে নিয়ে আসা হয়। বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ২৩ অক্টোবর সাইফুলকে আদালতে প্রেরণের সময় ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল।
সাইফুল আলম একজন যুক্তরাজ্য প্রবাসী হলেও চাউলধনী হাওরের লীজ গ্রহিতা দশঘর মৎসজীবি সমবায় সমিতির নিকট থেকে সাবলীজ গ্রহণ করে গত ১০ বছর ধরে একটি অস্ত্রবাজ বাহিনী গঠন করে জোরপূর্বক হাওর দখলের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ সাইফুল ও তার বাহিনীর নিকট একাধিক অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। রাতের বেলা গ্রামবাসীকে ভয় ভীতি দেখানোর জন্য প্রায়ই ফাঁকা গুলি করত। গত ২৮ জানুয়ারী হাওরের পানি সেচকে কেন্দ্র করে চৈতননগর গ্রামের কৃষক ছরকুম আলী দয়ালকে পিটিয়ে হত্যা করে সাইফুল বাহিনী। এ ঘটনার পর গ্রামবাসী বিশ্বনাথ থানা পুলিশকে এই বাহিনীকে গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আবেদন নিবেদন করলেও কোন কাজে আসেনি। এক পর্যায়ে দুঃসাহসিক সাইফুল সিলেট শহর থেকে অস্ত্রবাজ বাহিনী নিয়ে গোপনে একাধিক বৈঠক করে চৈতননগর গ্রামের নজির উদ্দিন এর বাড়ী ও কৃষি জমিতে জোরপূর্বক ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটা শুরু করলে বাদী পক্ষ বাধা দেন। এতে সাইফুল ও তার অস্ত্রবাজ বাহিনী গুলি করলে স্কুলছাত্র সুমেল ও তার বাবা চাচাসহ ৫জন গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে নিয়ে আসার পর সুমেল মৃত্যুবরণ করে। সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।