নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সিলেটে পরিবহন শ্রমিকদের অনিদিষ্টকালের কর্মবিরতির প্রথম দিনে যাত্রীদের চরমভাবে হয়রানী করা হচ্ছে। বিভিন্ন সড়কে প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, অটোরিক্সা আটকিয়ে নারী শিশুদের ভয়ভীতি ও টেনে হেচড়ে গাড়ী থেকে নামিয়ে সড়ক অবরোধ যাত্রী হয়রানী করা হচ্ছে। আঞ্চলিক সড়কগুলোতে কিছু কিছু সিএনজি কর্মবিরতি কথা বললেও একশো টাকার ভাড়া এক থেকে দেড় হাজার টাকা নিয়ে যাত্রী বহন করছে। কোথাও কোথাও মোটরসাইকেল আরোহীদের আটকিয়ে সড়ক অবরোধের কথা বলে যাত্রীদের লাঞ্চনা করা হচ্ছে। সর্বাবস্থায় সড়কে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে। কোন কোন এলাকায় শিশু মহিলারা গাড়ী রাস্তায় রেখে প্রাণ রক্ষার্থে আশপাশের বাড়ী ঘরে ঢুকে আশ্রয় নিয়েছেন। শ্রমিক পরিচয়ে বিভিন্ন সড়কে স্ট্যান্ডেগুলোতে লাঠিসোটা ও স্টীলের পাইপ নিয়ে শ্রমিকরা রাস্তায় দাড়িঁয়ে প্রাইভেট গাড়ীগুলোকে আটকিয়ে রাস্তায় উল্লাস করছে। গোয়ালাবাজার, তাজপুর, রশীদপুর, লালাবাজার, চন্ডিপুল, হুমায়ুন রশীদ চত্ত¡রসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সবগুলো ছোটবড় সড়কে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে। কোন স্থানে যাত্রীদের লাঞ্চনাও করা হয়েছে। বাইক রাইডাররা একশো টাকার ভাড়া একহাজার টাকা ও মহিলাদের এক দুজন করে বিভ্রতকর অবস্থায় টাকার লোভে যাত্রী পরিবহণ করছে। এ ধরনের অনেক অভিযোগ বিভিন্ন স্থান থেকে পাওয়া যাচ্ছে। পরিবহনের ৬ রেজিস্ট্রাড সংগঠনের আহুত কর্মবিরতি সুযোগে মানুষের সাধারণ চলাফেরার অবস্থা আটকিয়ে রাখা হয়েছে।
আজ ভোর ৮টা সময় আমাদের প্রতিনিধি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চন্ডিপুল পয়েন্টে সড়কে মোটরসাইকেল আটকের ঘটনা প্রতেক্ষ্য করেন। আবার একজন ভাড়াটিয়া বাইক রাইডার বিশ টাকার ভাড়ায় চারশো টাকা দাবী করলে যাত্রীর সাথে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তাকে আক্রমন করা হয়। অন্য যাত্রীদের সহায়তায় তিনি কোন রকম প্রাণে রক্ষা পান। দুপুরের দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক, কদমতলী, ফেঞ্চুগঞ্জ ও সিলেট-সুনামগঞ্জসহ সিলেট বিভাগের অনেক রাস্তায় এভাবে কর্মবিরতির নামে যাত্রী হয়রানী ও নৈরাজ্যের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে।
পরিবহণ শ্রমিকরা ৫ দফা দাবীতে এই কর্মবিরতি আজ ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের জন্য পালন করছেন। সিলেট এসএমপি কমিশনার ও উপ কমিশনারের অপসারণ, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানী ও রেকার বাণিজ্য এবং বিপুল অঙ্কের জরিমানা বন্ধ, সিলেট শ্রম আদালতে শ্রমিকনেতা নাজমুল আলম রুমেলকে প্রত্যাহার, উচ্চ আদালতের নিদের্শনা মোতাবেক পাথর কোয়ারী খোলে দেয়া এবং ভাঙাচুরা রাস্তা মেরামত, অটোরিক্সা বিক্রি নতুন করে বন্ধ এবং বিক্রয়কৃত গাড়ী রেজিস্ট্রেশন প্রদানের দাবীতে এ কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে বলে শ্রমিকরা দাবী করেছেন।