স্টাফ রির্পোটার: বিশ্বনাথ উপজেলার চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র সুমেল হত্যাকান্ডের ৪১দিন এবং কৃষক দয়াল হত্যাকান্ডের ৪মাস ১২দিন অতিবাহিত হলেও খুনি সাইফুল ও তার বাহিনী গ্রেফতার হয়নি। ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক ও হতাশা বিরাজ করছে। তবে সাইফুলকে গ্রেফতারের জন্য ইন্টারপোলে চিঠি দেয়া হয়েছে। সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আহমদ বেসরকারী একটি টেলিভিশনের সাথে সাক্ষাতকালে সাইফুলকে গ্রেফতারের বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন বলে জানান। এদিকে সাইফুলের বন্দুকের লাইসেন্স বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসককে পত্র দেয়া হয়েছে বলে একটি সূত্র জানায়।
বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আবুল কালাম ইন্টারপোলে চিঠি পাঠানোর তিনিও জানেন বলে জানান। তবে বিশ্বনাথের ডাক ২৪ ডটকম এর পক্ষ থেকে একাধিক বার পুলিশ সুপারের বক্তব্য গ্রহণের চেষ্টা করেও বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে সাইফুল ও তার বাহিনী যাহাতে দেশের বাহিরে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সকল সীমান্তে এলার্ট করে রাখা হয়েছে। পুলিশের এমন তৎপরতার পরও সাইফুল কেন গ্রেফতার হচ্ছে না ? এনিয়ে সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দয়াল হত্যাকান্ডের পর দিন-রাত সাইফুল থানায় থাকলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। বরং এজাহার থেকে সাইফুলের নাম বাদ দেয়ার জন্য কয়েক দফা এজাহার ফেরত দেয়া হয়। ২৮ জানুয়ারী কৃষক দয়ালকে তার জমিতেই খুন করা হয় এবং ১লা মে স্কুলছাত্র সুমেলকে হত্যার পর সাইফুলকে নিরাপত্তার জন্য তার পাশেই ছিল পুলিশ। তখনও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। মূলত পুলিশের সহায়তায় সাইফুল পালিয়ে যায়। ডাবল মার্ডারের পর বিশ্বনাথ থানার সাবেক ওসি শামীম মূসা ও এসআই ফজলুকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের দায়িত্ব কর্তব্য অবহেলা ও খুনের বিষয়ে পুলিশ সাইফুলকে সহায়তা করেছে কি না সে বিষয়ে তদন্ত করছেন গোলাপগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী। ইতিমধ্যে তিনি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন। এলাকার প্রত্যেক্ষদর্শী স্বাক্ষীগণ অভিযোগ করে বলেছেন, সুমেল হত্যাকান্ডের পর ওসি শামীম মূসা ঘটনাস্থলে গিয়ে খুনিদের গ্রেফতার না করে হত্যাকান্ডের রক্তমাখা আলামত নষ্ট করেছেন এবং খুনিদের পালিয়ে যেতেও সহায়তা করেছেন। এসআই ফজলু ঘটনার আগ থেকেই সাইফুলের বাড়ীর পাশে একদল পুলিশ নিয়ে অবস্থান করছিলেন। সাইফুল বাহিনীর অস্ত্র উদ্ধারের জন্য এলাকাবাসী বারবার লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দেয়ার পরও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি। এসব অস্ত্র দিয়েই ১লা মে গুলি করে সুমেলকে হত্যা ও তার বাবা চাচাকে গুলিবিদ্ধ করে। সুমেলের চাচা নজির ও মনির উদ্দিনের জমিতে মাটা কাটার সময় প্রতিপক্ষ কোন বাধা আপত্তি করলে থানা পুলিশ যাতে সাইফুলকে সহায়তা করে এনিয়ে পুলিশের সাথে সাইফুলের রফাদফাও করা হয়েছিল।
প্রত্যেক্ষদর্শী স্বাক্ষীরা যে অভিযোগ করেছেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বাক্ষীপ্রমাণ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে উর্ধ্বতন মহলের নিকট রির্পোট দাখিল করলে পুলিশের এই দুই কর্মকর্তার চাকুরীও হারাতে পারেন। কিন্তু সুমেল ও দয়ালকে তার পরিবার আর কোনদিন ফেরত পাবে না।