নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার চাউলধনী হাওরে সরকারি ভুমির সাথে কৃষকের ভুমির সীমানা নির্ধারণ না হওয়ায় দুটি হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে। এই হত্যকান্ড বিচার যাহাতে না হয় সেজন্য আসামিরা আইনের ফাঁক-ফোঁকরের সুযোগে বিচারে নানা টালহাবানা শূরু করছে। এ হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন কৃষক ছরকুম আলী দয়াল ও স্কুল ছাত্র সুমেল।
৮এপ্রিল শনিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাব ও সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে পৃথক দুটি সংবাদ সম্মেলন করেন চাউলধনী হাওর ও কৃষক বাঁচাও আন্দোলন ও নিহত সুমেল ও ছরকুম আলীর পরিবার। লিখিত বক্তব্যে সুমেল হত্যা মামলার বাদি ইব্রাহিম আলী সিজিল বলেন, ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি কৃষক ছরকুম আলী দয়াল ও একই বছরের পহেলা মে স্কুল ছাত্র সুমেলকে প্রকাশ্যে দিবালোকে বন্দুক দিয়ে গুলি করে চাইলধনী হাওর খেকো লন্ডনী সাইফুল ও তার বাহিনী। পুলিশ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৩২জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করলে ৩১জন আসামি আইনের ফাঁক- ফোঁকরে জামিনে মুক্তি লাভ করে স্বাক্ষিদের প্রাণনাশের ভয় ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। মামলার প্রধান আসামি সাইফুল মহামান্য হাইকোট, জেলা জজ ও সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মোট ১০বার জামিনের আবেদন না মঞ্জুর হলে সাইফুল ও তার বাহিনী বড় অংকের টাকা খরচ করে মামলা বিচারে বিভিন্ন অজুহাতে বাঁধার সৃষ্টি করছে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মামলা নং ৬০৬/২০২২নং মামলাটি গত ৩০ মার্চ স্বাক্ষীর জন্য ধার্য্য তারিখ ছিল। বাদি ইতিমধ্যে ১০ বার আদালতে হাজিরার পর ঐদিন পূণরায় আদালতে হাজিরা দিলে আসামি হাজির না থাকায় স্বাক্ষী হয়নি। মামলার বাদি অভিযোগ করে বলেন, বড় অংকের টাকার বিনিময়ে পুলিশ সাইফুলকে আদালতে হাজির না করে হার্ট এ্যাটাকের অজুহাতে ওসমানী হাসপাতারে ভর্তি করে দেয়। ইতি পূর্বে সাইফুল কোন আদালতে তার অসুস্থতার কথা কখনও উল্লেখ করেনি। মামলার বিচার কার্যকে বাঁধাগ্রস্থ করতে এমন নাটক সাজিয়েছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ট তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে জামিনকৃত সকল আসামিদের জামিন বাতিলের দাবি জানান। লিখিত বক্তব্যে ইব্রহিম আলী সিজিল জানান, দশঘর মৎসজিবী সমবায় সমিতি নামের ভুয়া সমিতিটি চাউলধনী হাওর লীজ এনে লীজের শর্ত ভঙ্গ করে যুক্তরাজ্য প্রবাসি সাইফুল ও বাহিনীর নিকট সরাসরি চুক্তি নামার মাধ্যমে সাবলীজ প্রদান করে। যা অবৈধ ও বেআইনি। অনেক অভিযোগ করা সত্বেও রহস্য জনক কারনে হাওররে লীজ ও সমিতির রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করা হচ্ছেনা। এজন্য উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দায়ি করেছেন তিনি। চাউলধনী হাওরে সরকারি খাস ভুমির সাথে গরিব কৃষকদের ভুমির সীমানা নির্ধারণ না হওয়ায় গত ২০ বছর ধরে কৃষকদের খাল পুকুর নালা জোর পূর্বক দখল করে ও সেচ দিয়ে মাছ ধরছে সাইফুল বাহিনী। এতে কৃষকের সাথে সাবলীজ গ্রহিতার বিরুধ সৃষ্টি হয়। হাওরের সীমানা নির্ধরনের জন্য মহামান্য হাইকোটে ৩৫৩১/২০২১ ও ২০৬৮/২০২৩ইং দুটি রিট দাখিল করলে মহামান্য হাইকোট কৃষকের ভ’মির সাথে সরকারি ভুমির সীমানা নির্ধারণের নির্দেশ দেন। কিন্তু উপজেলা ও জেলা প্রশাসন হাইকোটের এ নির্দেশ পালন করছেনা। বরং কৃষকরে ভুমি সহ পূণরায় হাওরটি লীজ প্রদানের জন্য প্রসেসিং করা হচ্ছে। এলাকাবাসি জরিপ না হওয়া পর্যন্ত লীজ না দেয়ার জন্য ভুমি ও মৎস মন্ত্রনালয়ের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, হাওর আন্দোলনের আহবায়ক ও বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের অন্যতম সদস্য আবুল কালাম, যুগ্ম আহবায়ক ও দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আরিফ উল্লাহ সিতাব, যুগ্ম আহবায়ক নজির উদ্দিন, মাওলানা ছমির উদ্দিন, সামস উদ্দিন মেম্বার, নিহত সুমেলের মা খয়রুন নেছা, বোন সুমা বেগম, দয়াল হত্যার বাদি আহমদ আলী, আরশ আলী, সিদ্দেক আলী, সালে আহমদ, হরিছ আলী, আমির আলী, হছিন আহমদ, আব্দুল করিম, পাবেল আহমদ, লিটন মিয়া প্রমুখ।