নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার এলাহাবাদ (তেলিকোনা) মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু তাহের মোঃ হোসাইনকে মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে অব্যাহতি দিয়েছেন, মাদরাসার এডহক কমিটির সভাপতি মোঃ নিজামুল ইসলাম। শুধু মাদরাসার অধ্যক্ষকে অব্যাহতি নয়, অপমান, লাঞ্চিত ও একাধিকবার মাদরাসায় আক্রমন করে অফিস ভাংচুর ও তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। অধ্যক্ষ স্থানীয় প্রশাসনে বারবার অভিযোগ দায়ের করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। জামাত-শিবিরের একটি সিন্ডিকেট বিদেশ থেকে লাখ লাখ টাকা খরচ করে অধ্যক্ষকে মাদরাসা থেকে বের করে দেয়ার সব ধরনের চেষ্টা তদবির করে আসছে। মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রনে থেকে জামাত-শিবিরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছিল। অধ্যক্ষ আবু তাহির মোঃ হোসাইন ফুলতনী সমর্থক বা সরকারি আলিয়া সমর্থক হওয়ায় উগ্র কর্মকান্ডে বাধা দেয়ায় বিরোধের মুল কারন।
সিলেটের এডিসি শিক্ষার এক পত্রের আলোকে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অধ্যক্ষ আবু তাহির মোঃ হোসাইনকে ‘অধ্যক্ষের পদ’ থেকে অব্যাহতি দিয়ে কক্টর জামাতি শিক্ষক মখলিছুর রহমানকে দায়িত্ব প্রদান করলে, অধ্যক্ষ আবু তাহির মহামান্য হাইকোর্টে এই চিঠির বিরুদ্ধে একটি রিট পিটিশন ১২৬/২০২৩ইং দায়ের করলে বিচারপতি মোঃ খছরুজ্জামান ও বিচারপতি ইকবাল কবির এর দ্বৈত অধ্যক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে ৬মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। এই আর্দেশের বিরুদ্ধে শিক্ষক মখলিছুর রহমান মহামান্য সুর্প্রীম কোর্টে, হাইকোর্টের আর্দেশ স্থগিতের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখা হয়। তারপর কোন উপায়ন্তর না দেখে বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করে নিজামুল ইসলামকে মাদরাসার সভাপতি করা হয়।
গত ১০ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড নিজামুল ইসলামকে সভাপতি করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি অনুমোদন দেয়। সভাপতি হয়েই নিজামুল ইসলাম প্রথমে অধ্যক্ষের নিকট থেকে মাদরাসার রেজুলেশন খাতা ছিনিয়ে নিয়ে অফিসে তালা মেরে দেন। তারপর মাদরাসার অফিস ভাংচুর ও অধ্যক্ষকে একাধিকবার লাঞ্চিত করা হয়। গত ২০ মার্চ নিজামুল ইসলাম অধ্যক্ষ আবু তাহিরকে চার মাসের ছুটি দিয়ে কারণ দশানোর নোটিশ জারী করেন। জবাব না দেয়ায় ২৬ মার্চ অধ্যক্ষ আবু তাহিরকে লাঞ্চিত করে অফিসা ভাংচুর ও নতুন আরেকটি তালা মেরে দেন। বিশ^নাথ থানায় এনিয়ে দু,তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। শুধু একজন দারোগা গিয়ে প্রতিপক্ষের সাথে দেখা স্বাক্ষাত করে চলে আসেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অধ্যক্ষের কোন আবেদন-নিবেদন রাখা হয়নি বলে গুরুত্বর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বিশ^নাথ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উগ্রপন্থিদের নিকট থেকে বিপুল অর্থের টাকা নিয়ে অধ্যক্ষের বিরোধীতা করে আসছেন।
সভাপতি নিজামুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। তবে তিনি এডহক কমিটির সভাপতি হওয়ায় অধ্যক্ষকে অব্যাহতি দিতে পারেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, এ বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি।
বিশ্বনাথ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, বিষয়টি শিক্ষা অফিসের হওয়ায় এখানে পুলিশের করণীয় কিছু নেই।
অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, একটি আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ হয়ে অনেক অপমান সইতে হচ্ছে। অবশেষে হাইকোর্টের নিদের্শ অমান্য করে সভাপতি মাদরাসার স্বার্থের পরিপন্থি কাজে জরিত রয়েছেন। প্রয়োজনে তিনি মহামান্য হাইকোর্ট অবমাননার অভিযোগ দায়ের করবেন।