ডাক ডেক্স : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার একটি প্লাষ্টিক কারখানার বিষাক্ত গ্যাস ও কেমিক্যালে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। কারখানার আশপাশ গ্রামে বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এ কারখানাটির কারনে এলাকায় ভয়াবহ পরিবেশ দূষন হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা সদর থেকে কারখানাটি প্রায় ১০ কিলোমিটার দুরে থাকায় প্রশাসন ও সচেতন মহলের নজরে আসেনি এতো দিন। উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের পুরান হাবড়া ও নতুন হাবড়া বাজারের মধ্যখানে চড়চন্ডি গ্রামে কারখানাটি অবস্থিত। কারখানাটির মালিক হচ্ছেন দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছোরাব আলী। তিনি চড়চন্ডি গ্রামের বাসিন্ধা।
কারখানার মালিক, মহিলা, শিশু ও নি¤œ মুজুরীভুক্ত লোক দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পলিথিন, বোতল ও প্লাষ্টিকের তৈরী বিভিন্ন বস্তু এনে কেমিক্যাল মিশ্রিত করে কারখানায় গুড়ো করেন। এতে পানি ও বাতাসের মাধ্যমে বিষাক্ত গ্যাস চর্তুরদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পলিথিন ও প্লাষ্টিকের বোতল ও বিভিন্ন দ্রবাধি প্রতিদিন সংগ্রহ করা হয় এবং বর্তমানে প্রায় ১৫ থেকে ২০ টনের মত মাল কারখানায় রয়েছে এবং এগুলো গুড়ো করে অন্যত্র বিক্রি করা হবে।
স্থানীয় জনসাধারণের অভিযোগ, কারখানার বিষাক্ত গ্যাস ও কেমিক্যালের কারনে দু’ব্যক্তি মারাও গেছেন। কিন্তুএ বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না। কারখানার আশপাশ গ্রাম ও বাড়ি ঘরে শ্বাসকষ্ট, চর্ম রোগ সহ বিভিন্ন রোগে শিশু সহ লোকজন আক্রান্ত হচ্ছেন। এলাকাটি মৎসজীবি সম্প্রদায়ের লোকজন থাকায় কি কারনে রোগ ব্যাধি ছড়াচ্ছে এ বিষয়টি কারো তেমন কোন মাথা ব্যথা নেই।
কারখানা থেকে প্রায় এক দেড় কিলোমিটার দূরে রয়েছে সিলেটের প্রখ্যাত চাউল ধনী হাওর। এই হাওরে মিটা পানির মাছ মধ্যপ্রাচ্ছ, যুক্তরাজ্য সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানী হয়ে থাকে। চরচন্ডি খাল হয়ে এ কারখানার ময়লা আবর্জনা বর্জ ও কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি চাউল ধনী হাওর সহ এলাকার পুকুর খাল বিল নালায় জমে পানি ও মাটি দুষিত হচ্ছে। এক সময় মাছ সহ এলাকার জীব বৈচিত্র ধবংস হয়ে যাবে। কারখানার পাশ দিয়ে পাকা রাস্তা চলে গেছে। যান বাহন কিংবা পায়ে হেঁটে কারখানার পাশ দিয়ে গেলে কেমিক্যালের গ্যাসে অনেকের নাক মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এক সময় হাওরের মাছ সহ সকল জীব বৈচিত্র ধবংস হওয়ার আশংকা রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল জানান, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমির আলী বলেছেন, কারখানার মালিক সরকারের সকল নিয়মকানুন মেনেই শিল্প কারখানাটি গড়ে তুলেছেন। কারখানার মালিক ছুরাব আলী বলেন, এই কারখানার কারনে এলাকায় কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে এবং কোন পরিবেশ দূষন হচ্ছেনা। আমার প্রতিপক্ষরা এসব অপপ্রচার করছেন।