বিশ্বনাথে দামান্দের হাতে ফুফু শাশুড়ি খুন!

Uncategorized
শেয়ার করুন

ডাক ডেক্স: সিলেটের বিশ্বনাথে ফুফু শাশুড়িকে খুন করে এক লাখ টাকা আত্নসাৎ করে দামান্দ। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের দুহাল গ্রামে। ঘাতক দামান্দের নাম নুর উদ্দিন (২৮)। সে ছাতক উপজেলার ভাওয়াল গ্রামের মৃত মনোফর আলীর পুত্র। নুর উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে দুহাল গ্রামে তার নানার বাড়িতে বসবাস করছে এবং নানা বাড়িতেই বিয়ে করেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, দুহাল গ্রামের মৃত রিফাত উল্লার মেয়ে আয়ফুল বেগম (৫২) দীর্ঘদিন ধরে তার পিতার বাড়িতে বসবাস করছেন। একই বাড়িতে নুর উদ্দিন ও বসবাস করে। আয়ফুল বেগমের সংসারে ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। দুই মেয়ে বিবাহ দেয়ায় এবং দুই ছেলে প্রবাসে থাকায় তিনি বাড়িতে একাকি বসবাস করতেন। কিছু দিনের মধ্যে প্রবাসি ছেলেরা দেশে আসার কথা জানলে তিনি ঘর তৈরীর প্রস্তুতি নেন। এজন্য গত ২৮ জুলাই আয়ফুল বেগম বিশ্বনাথ থানা সদরে একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋন গ্রহন করেন। এই টাকার খবর জানতে পারে নুর উদ্দিন। এ সুযোগে আয়ফুল বেগমের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে চা-নাস্তা, পান খাওয়াতে থাকে নুর উদ্দিন।
গত (৩আগষ্ট) শনিবার দিবাগত রাতে নুর উদ্দিন পূর্ব পরিকল্পনা মতে ফুফু শাশুড়িকে ঘুমের ঔষধ খাওয়ায় এবং ঘরে থাকা একলাখ টাকা নিয়ে যায়। পরদিন (৪আগষ্ট) নুর উদ্দিন ফুফু শাশুড়ির দরজায় চা হাতে নিয়ে পায়চারি ও ডাকাডাকি করে। কিন্তু ঘরের ভেতর থেকে দরজা বন্ধ থাকায় কৌশলে একজন শিশুকে দিয়ে দরজা খুলে আয়ফুল বেগমকে বিছানায় মৃত অবস্থায় দেখতে পান। প্রথমে আয়ফুল বেগমের ভাইবিরাদ ও আত্নীয় স্বজন আয়ফুল বেগম হৃদরোগে বা উচ্চ রক্তচাপে মারা গেছেন মনে করে (৪আগষ্ট) রবিবার লাশ দাফন করেন। পরবর্তীতে নুর উদ্দিনের কথাবার্তা ও আচার-আচরণ সন্দেহ হলে এবং আয়ফুল বেগমের এক লাখ টাকা খুজে না পাওয়ায় মেয়ে, দুই ভাই মখলিছ মিয়া ও ইলিয়াছ মিয়া ও আত্নীয় স্বজন তার উপর চাপ সৃষ্টি করেন। এক পর্যায়ে নুর উদ্দিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন এবং শেষে আত্নীয় স্বজনের সহযোগীতায় তাকে (৭আগষ্ট) পুলিশের এস আই দেবাসিষ শর্মা বাড়ি থেকে নুর উদ্দিনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ঘটনাস্থলে একপাতা ঘুমের ঔষধ ও ২ টি গ্লাবস (প্লাষ্টিকের হাত মোজা) ও একটি কাচের ভাঙ্গা গ্লাস পাওয়া যায়।
থানা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নুর উদ্দিন ঘুমের ঔষধ খাইয়ে ফুফু শাশুড়িকে হত্যা করার দায় স্বীকার করে এবং এ ঘটনায় মখলিস ও ইলিয়াছ আলী জড়িত বলে পুলিশকে জানায়। কিন্তু আয়ফুল বেগমের ভাই মকবুল হোসেন ও স্থানীয় গ্রামবাসি নুর উদ্দিনের এ অভিযোগ মানতে নারাজ। তারা বলছেন মকলিস ও ইলিয়াছ নুর উদ্দিনকে আটক করে পুলিশে দেয়ায় এমন অভিযোগ করছে। পুলিশ (৭আগষ্ট) মঙ্গলবার সন্ধায় মকলিস ও ইলিয়াছকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে একলাখ টাকাও উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে। সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওসমানীনগর সার্কেল সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিরীহ কোন লোক হয়রানি হবেনা বলে স্থানীয়দের আশ্বাস দিয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বনাথ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিম মুসা জানান, আপাতত নুর উদ্দিন এ ঘটনার সাথে জড়িত আমরা জোর তদন্ত চালাচ্ছি।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *