নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বনাথ উপজেলার চৈতননগর এলাকার ইসলামপুর গ্রামের মৃত আফতাব আলীর পুত্র ডাবল মার্ডারের আসামী জেলহাজতে থাকা সাইফুল আলমের একনলা বন্দুকের লাইসেন্স বাতিল ও বন্দুকটি রাষ্ট্র বরাবরে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক আদেশে এ লাইসেন্সটি বাতিল করা হয় মর্মে একটি সূত্র জানিয়েছে। সাইফুলের একনলা বন্দুকের নম্বর- Z- 727258W/14V76995W14। গত ১ মে চৈতননগর গ্রামের নজির মিয়ার বাড়ি-জমিতে ভেকু মেশিন দিয়ে সাইফুল ও তার অস্ত্রবাজ বাহিনী জোরপূর্বক মাটি কাটতে গেলে জমির মালিকরা বাধা দেয়। এতে সাইফুল ও তার সঙ্গীয় বাহিনী ৭/৮টি পিস্তল ও বন্দুক দিয়ে প্রতিপক্ষের উপর মুহমুহ গুলিবর্ষন করে। এতে স্কুলছাত্র সুমেল নিহত হয় এবং তার বাবা চাচাসহ ৪জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঘটনার দুইদিন আগে সিলেট শহরের একটি এলাকা থেকে পিস্তল বন্দুক সহ একটি অস্ত্রবাজ বাহিনী সাইফুলের বাড়িতে আনা হয় এবং পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গুলিবর্ষনের ঘটনা ঘটানো হয়।
সুমেল হত্যাকান্ডের পর বিশ্বনাথ থানা পুলিশ গত ৮ মে সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবরে সাইফুলের একনলা বন্দুকের লাইসেন্স বাতিলের আবেদন করেন। এতে বলা হয়, ০১/০৫/২০২১ইং তারিখে আসামী সাইফুল তার সহযোগিদের নিয়ে সুমেল আহমদ শুকুরকে গুলিবর্ষন করে হত্যা করে। বাদীর ভাই মানিক মিয়া ও মনির মিয়াকে গুলিবর্ষন করে গুরুত্ব আহতও করে। প্রভাবশালী মামলাবাজ, ভূমি খেকো, বৈধ, অবৈধ্য অস্ত্র ব্যবহাকারি সাইফুল আরও দুর্ঘটনা ঘটনানোর সমূহ সম্ভাবনা বিদ্ধমান। তাহার এহেন কার্যকলাপে এলাকাসহ থানা এলাকায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। উল্লেখিত মামলার মত অন্যায়মূলক হত্যা ও দূর্ঘটনা রোধে সাইফুলের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের আদেশ সহ বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী বলে উল্লেখ করা হয়।
থানা পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় গত ১লা সেপ্টেম্বর আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬এর ২৫(ক) ধারা লঙ্গন ও কিশোর সুমেলকে হত্যার দায়ে কেন বন্দুকের লাইসেন্স বাতিল, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ বাজেয়াপ্ত করা হবে না মর্মে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখা প্রদানের জন্য সাইফুলকে নোটিশ প্রদান করা হয়। কিন্তু তাতেও সাইফুল কোন কর্নপাত না করায় তার বাড়ির গেইটে নোটিশ টানিয়ে দেয়া হয়। আইন মোতাবেক সুমেল হত্যাকান্ডের পর এ ঘটনায় সাইফুলের বৈধ বন্দুক ব্যবহার করা হলে বন্দুক ও গুলিসহ থানায় জমা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেপরোয়া সাইফুল আইনকে অমান্য করে বন্দুক ও গুলি থানা বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা প্রদান করেনি। তবে লোকমূখে জানা গেছে সিলেট শহরের একটি থানায় সাইফুল আটকের আগে একটি বন্দুক জমা দিয়েছিল। এ ঘটনার সত্যতা জানা সম্ভব হয়নি।
সাইফুল প্রায়ই বহিরাগত অস্ত্রধারীদের এলাকায় এনে রাতের বেলা ফাঁকা গুলি করে এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
অবশেষে সাইফুলের অস্ত্রের ক্ষমতা ও টাকার দাপট হঠাৎ যেন থমকে গেছে !