ডাক ডেক্স : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা দোহাল গ্রামের ৪ সন্তানের জননী আয়ফুল হত্যাকান্ডে সন্দেহভাজন আসামি নিহত আয়ফুল বেগমের নিরীহ দুই ভাই হাজী মখলিস আলী ও ইলিয়াস আলীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন সিলেটের আমল গ্রহণকারি তৃতীয় আদালত। (২৬আগষ্ট) সোমবার শুনানী শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। বাদিনী নাছিমা বেগম আদালতে এক দরখাস্তের মাধ্যমে আসামি মখলিস আলী ও ইলিয়াস আলীকে তার মামা দাবি করে তাদের জামিন মঞ্জুরের আবেদন করেন।
গত (৩আগষ্ট) শনিবার ভিকটিম আয়ফুল বেগমকে ঘাতক নুর উদ্দিন ঘুমের ঔষধ খাইয়ে এবং শ্বাস রোদ্ধ করে আয়ফুল বেগমকে হত্যা করে ঘরের দরজা জানালা লাগিয়ে বের হয়ে যায়। প্রথমে বিষয়টি বুঝতে না পারায় আয়ফুল বেগমের লাশ দাফন করা হয়। এক পর্যায়ে ঘাতক নুর উদ্দিনের আচার আচরণ ও কথা বার্তায় সন্দেহ হলে আত্নীয় স্বজন ও গ্রামবাসি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যাকান্ডের কথা অকপটে স্বীকার করে এবং আয়ফুল বেগমের ঋনের ১ লাখ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। তার স্বীকারোক্তি মুলক এমন কথাবার্তায় স্বজনরা হতবাক হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে মখলিস আলী ও ইলিয়াস আলী ঘাতক নুর উদ্দিনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেন। থানা পুলিশ আসার পূর্ব পর্যন্ত নুর উদ্দিন একাই হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করলেও পুলিশ আয়ফুলের ২ ভাইকে থানায় নিয়ে যায়। প্রথমে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হলেও পরে হত্যা মামলার সাথে তাদেরকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পুলিশের এস আই দেবাশিষ শর্মা নুর উদ্দিনের কথামত হাজি মখলিস আলীর ঘর থেকে তার ব্যক্তিগত খরছের ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে আসে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জামাল আহমদ ও পালের চক গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বি আব্দুল গফুর মখলিস আলীর ঘর থেকে উদ্ধার কৃত ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা আয়ফুল বেগমের ঋনের টাকা নয় মর্মে বার বার পুলিশকে অবহিত করেছেন। কিন্তু পুলিশ অবশেষে এ টাকার জব্দ তালিকায় আদালতে প্রেরণ করেছে। আয়ফুল বেগমের মেয়ে বাদিনী নাছিমা বেগম তার মায়ের ঋনের ১ লাখ টাকা নুর উদ্দিন চুরি করে নিয়েছে মর্মে আদালতে এক আবেদনে জানিয়েছেন। সেই টাকা পুলিশ একনো উদ্ধার করতে পারেনি। এমন অবস্থার প্রেক্ষিতে মায়ের হত্যাকান্ডের বিচার চাইতে গিয়ে বাদিনী হয়রানির সম্মুখিন হয়ে পড়েছেন। তিনি মা’র হত্যাকারি একমাত্র নুর উদ্দিনকে আসামি করলেও পুলিশের প্ররোচনায় নুর উদ্দিন মখলিস আলী ও ইলিয়াস আলীকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িয়েছে বলে এলাকাবাসির অভিযোগ। নুর উদ্দিনের বক্তব্য যাচাই বাচাই না করে ভিকটিমের দুই ভাইকে এ ঘটনায় জড়িয়ে একটি মহল হত্যাকান্ডটিকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করছে।
এ ব্যাপারে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করলে ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসবে। এ ঘটনার প্রায় ২০ দিন অতিবাহিত হলেও নিহতের লাশের ময়না তদন্ত হয়নি।