অনলাইন ডেক্স: বহুল প্রতীক্ষিত সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক এবং সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই উদ্বোধন করেন তিনি। একই সময়ে পটুয়াখালীর দুমকির লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর নির্মিত দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বহুল কাঙ্ক্ষিত পায়রা সেতুর উদ্বোধনও করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সারাদেশে একটা সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করেছি। সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে কিন্তু ধরলা সেতুও আমাদের সময় করা। যমুনা নদীর ওপর রেলসহ বঙ্গবন্ধু সেতু, এই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা। কাজেই এদেশে যতটুকু উন্নয়র সেটা আমরাই করেছি। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও দৃষ্টিনন্দন রেল স্টেশনসহ যত উন্নয়ন হয়েছে সবই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে।”
গণভবনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এদিকে, সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সিলেট থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হন জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এসময় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিলেট-৩ আসনের সাংসদ হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান, জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকু রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন প্রমুখ।
জানা গেছে, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার দাবি দীর্ঘদিনের। ২০১৭ সালে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না হারবারের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু চায়না হারবার যে ব্যয় প্রস্তাব করে, তা ছিল সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রাক্কলেন চেয়ে ৪২ শতাংশ বেশি। ফলে চায়না হারবারের সঙ্গে কাজ আর এগোয়নি। পরবর্তীতে নিজস্ব অর্থায়নে মহাসড়কটির কাজ করার সিদ্ধান্তও হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা আগায়নি।
গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী ড. এ কে আবদুল মোমেন মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার কথা নিজের ইশতেহারে রাখেন। নির্বাচিত হয়ে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ফলে মহাসড়কটি নিয়ে মানুষের প্রত্যাশার পারদ বাড়তে থাকে। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন মোমেন। সিদ্ধান্ত হয়, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হবে। পাশাপাশি ধীরগতির যানবাহনের জন্য থাকবে আলাদা দুটি লেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। ঢাকার কাঁচপুর থেকে সিলেটের পীর হাবিবুর রহমান চত্বর পর্যন্ত ২১০ কিলোমিটার মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করা হবে। এতে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পে সিংহভাগ অর্থই দিচ্ছে এডিবি। এরই অংশ হিসেবে গত শুক্রবার এডিবি ১৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করেছে। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।