অনলাইন ডেস্ক :: পটুয়াখালীর ধানখালীতে কয়লাভিত্তিক আরএনপিএল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের স্ক্র্যাপ মালপত্র চুরির অভিযোগে স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৩৪ জন নেতা-কর্মী ও অজ্ঞাতনামা ১৬ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রেটির ডেপুটি ম্যানেজার (অ্যাডমিন) আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে রোববার (১২ জানুয়ারি) কলাপাড়া থানায় মামলাটি করেন।
মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন, ধানখালী ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি সোহেল মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন মোল্লা, ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কালাম তালুকদার, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি ফিরোজ উদ্দিন। এছাড়া অন্য আসামিদের অধিকাংশই স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মী। অভিযুক্তদের সবার বাড়ি উপজেলার ধানখালী, লোন্দা ও গিলাতলা গ্রামে।
চুরি যাওয়া মালপত্রের মধ্যে রয়েছে তামার তার, লোহার সামগ্রী, স্টিলের পাতসহ বিভিন্ন ধরনের নির্মাণসামগ্রী। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ডিসেম্বর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সীমানা প্রাচীরের ১৩ নম্বর সিকিউরিটি পোস্টে চোর চক্র ঢুকে বিপুল পরিমাণ মালামাল নিয়ে যায়। আরএনপিএল কর্তব্যরত সিকিউরিটি গার্ডরা বিষয়টি দেখতে পেয়ে কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে ফাঁড়ির পুলিশ ও আরএনপিএল’র নিজস্ব সিকিউরিটি গার্ড এবং প্লান্টে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা পরদিন (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে গিলাতলায় অভিযান চালায়।
এ সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুরি হওয়া চার টনের বেশি স্ক্র্যাপ মালামালসহ একটি গাড়ি আটক করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এরপর উদ্ধারকৃত মালামাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে রাখা হয়।
পরবর্তীতে আবার ৯ জানুয়ারি গভীর রাতে আসামিরা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভেতর ঢুকে তামার তার, লোহার সামগ্রী, স্টিলের পাতসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল চুরি করে গিলাতলা বাজারের নিকটে জমা করেন। যার বাজার মূল্য আনুমানিক চার লক্ষ টাকা। ১০ জানুয়ারি সকালে ওই মালামাল তিন–চারটি গাড়িতে পাচারের জন্য তোলা হচ্ছিল।
এ সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তাকর্মীরা বিষয়টি তাদের কর্তৃপক্ষকে জানালে পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যদের সহায়তায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক (সিকিউরিটি) মোহাম্মদ সায়েম উদ্দিন বাবু, এক্সিকিউটিভ (সিকিউরিটি) মো. মাহাবুবুর রহমান, জুনিয়ার এক্সিকিউটিভ মোহাম্মদ পারভেজ, সিকিউরিটি সুপারভাইজার সাইদুর রহমান গিয়ে চোরাইকৃত আড়াই লাখ মূল্যের পাঁচ টন মালামালসহ একটি গাড়ি আটক করেন। বাকি দেড় লাখ টাকার মালামাল এখনও উদ্ধার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে থেকে নিয়মিত লোহা ও তামার স্ক্র্যাপ চুরি হচ্ছে। রাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব পাচার করছেন। চকলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম বলেন, মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুত্র-দৈনিক ইত্তেফাক