নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বনাথ উপজেলার চাউলধনী হাওরে জাতীয় অর্থনীতির মেরুদন্ড কৃষকের নিজের ভূমি রক্ষা করতে গিয়ে লীজ ও সাবলীজ গ্রহিতার হাতে দু’জন খুন হওয়ার পরও হাওরটিতে শান্তি ফিরে আসেনি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আবারও হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থলোভী, ভদ্রবেশি কিছুলোক কৌশলে বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে কৃষকদের পুকুর ও জমি দখলের চেষ্টা করায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে। হাওর রক্ষা কমিটি ও কৃষকদের উপর নতুন করে একটি সাজানো মামলাও দায়ের করা হয়েছে। গত ৯ অক্টোবর কামারগাঁও গ্রামের জুনাব আলী বাদী হয়ে দন্ডবিধি আইনের ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/ ৩২৬/৩০৭/৩৭৯ ধারায় বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও চাউলধনী হাওর ও কৃষক বাঁচাও আন্দোলনের আহবায়ক মোঃ আবুল কালাম এবং দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন ধন মিয়াসহ ১১জনের বিরুদ্ধে একটি সাজানো মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় আজ ১০ অক্টোবর সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বিশ্বনাথ আদালত থেকে ১০জন আসামী জামিন লাভ করেন। জামিনের তথ্য নিশ্চিত করেন আসামীপক্ষের সিনিয়র আইনজীবি এএসএম গফুর।
বাদী তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, ১৪২৪-২৯বাংলা পর্যন্ত চাউলধনী হাওর লীজ এনে মাছ আহরণ করছেন। গত ৩ অক্টোবর আসামীগণ ৫০হাজার টাকা মুল্যের বাশেঁর খুটিসহ ২লক্ষ ২০হাজার টাকার মালামাল ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মুল্যের দুটি নৌকা আসামীরা চুরি করে নিয়ে যায়।
এদিকে, এলাকাবাসীর অভিযোগ দশঘর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ হাওরটি লীজ নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল ও তার বাহিনীর নিকট সাবলীজ প্রদান করে। এই সাবলীজের মুল দলিলও বিশ্বনাথ থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে। হাওর লীজ নিয়ে সাবলীজ দেয়া প্রমাণিত হলে লীজ বাতিল হওয়ার বিধান রয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন এই বিষয়টি রহস্যজনক কারনে নজরে আনছে না। লীজ ও সাবলীজ গ্রহিতাদের হাতে কৃষক ছরকুম আলী দয়াল ও স্কুলছাত্র সুমেল খুন হয়। সুমেল হত্যা মামলার ৩১ আসামী জামিনে মুক্তিলাভ করে হাওরে পূণরায় ক্ষমতা প্রদর্শন করছে।
এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় একটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ৫৫ লাখ টাকার বিনিময়ে তাঁর গ্রামের কিছু মৎস্যজীবিদের নিয়ে হাওরটি পূণরায় সাবলীজ গ্রহণ করেন। ১৫ লাখ টাকায় বিভিন্ন লোক ম্যানেজ করার জন্য টাকা গ্রহণ করেন। চাউলধনী হাওরপারের কৃষকদের অভিযোগ, গত ৩ অক্টোবর রামপাশা ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামের কিছুলোক মীরগাঁও এলাকায় এসে কৃষকদের পুকুর ও জলাশয়ে মাছ ধরতে চাইলে এলাকাবাসী জড়ো হতে থাকেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়, সেখানে কোন মারামারির ঘটনাও ঘটেনি। কিন্তু এই দিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৬ দিন পর ৯ অক্টোবর বিশ্বনাথ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মাসুম আহমদ নামের একজনকে রামদা দিয়ে গুরুত্বর আহত করার অভিযোগ করা হয়েছে এজহারে। কিন্তু স্থানীয় গ্রামবাসী জানিয়েছেন, মাসুম এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলনা। ইতিপূর্বে গ্রামবাসীর উপর আরো ২/৩টি সাজানো মামলা দায়ের করা হলে, আদালতে তা খারিজ হয়ে যায়। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।