এমপির গাড়িতে চেয়ারম্যান অনুসারিদের হামলা : হাইব্রিডদের দখলে বিশ্বনাথ আওয়ামীলীগ

Uncategorized
শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্বনাথ উপজেলা আইন আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা শুরুর পূর্ব মূহুর্তে পুলিশের উপস্থিতিতে সিলেট-২ আসনের সাংসদ গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা মোকাব্বির খানের গাড়িতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা ও জুতা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ হামলার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়ার অনুসারিদের দায়ি করা হয়েছে। আজ সোমবার (১০ আগষ্ট) দুপুর ১১টার উপজেলা বিআরডিবি হলে পূর্ব নির্ধারিত আইন আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা ছিল। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সাংসদ মোকাব্বির খান এই প্রথম বিশ্বনাথ আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় যোগদান করেন। সাংসদ যখন উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে পৌছেন, তখন চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা চলছিল। সাংসদের গাড়িটি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে পৌছা মাত্রই গাড়িতে হামলা চালানো হয় এবং জুতা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। যে কারনে তড়িগড়ে করে সভার হল রুমে সাংসদ প্রবেশ করেন।

আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় মোকাব্বির খান যোগদান করছেন, এই সংবাদ পেয়ে তাকে প্রতিহত করার জন্য আওয়ামীলীগের একটি অংশ পূর্ব হতে প্রস্তুতি গ্রহন করে। এতে চেয়ারম্যান অনুসারি লোকজন তার কার্যালয়ে সমবেত হন। তখন বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাওয়া ভবনের ঘনিষ্ট নেতা উপজেলা আওয়ামীলীগের কথিত সভাপতি পংকি খান মোকাব্বির খানকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় যোগদান করে প্রতিপক্ষকে দেখে নেয়ার ঘোষনা দেন। কিন্তু মোকাব্বির খান বিষয়টি না জেনে এ ফাঁদে পা দিয়ে অপমানিত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ওসি শামিম মুসা তার বক্তব্যে বলেন, সাংসদের গাড়িতে হামলার ঘটনায় অভিযোগ দিলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই কথার প্রতিবাদ জানিয়ে সাংসদ মোকাব্বির খান তার বক্তব্যে বলেন, পুলিশ প্রটোকলে আমার গাড়িতে হামলা করা হয়েছে। সুতরাং থানায় অভিযোগ দেয়ার কোন মূল্য নেই। তিনি আরো বলেন, বিশ্বাস ঘাতক খন্দকার মোস্তাক মরে গেলেও বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরে অনেক মোস্তাকের জন্ম হয়েছে। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।

উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত শোক সভায় নুনু মিয়া বলেন, এ ঘটনার জন্য জামাত বিএনপি দায়ি। আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা সুবিধাবাদি খাই খাই, হাইব্রিডরা আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করে কথিত ঐক্যফ্রন্টের বিএনপি প্রার্থী মোকাব্বির খানের গণফোরামে যোগ দিয়ে আতাঁত করে উপজেলা আওয়ামীলীগকে ধবংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এই হাইব্রিডরা আওয়ামীলীগে থাকার কোন অধিকার নেই। তিনি হামলার এ ঘটনায় আওয়ামীলীগের কোন নেতা কর্মী জড়িত নয় বলে উল্লেখ করেন। এদিকে নুনু মিয়া বিশ্বনাথে থানার ওসি বরাবরে এক লিখিত আবেদনে বলেন, মোকাব্বির খানের গাড়িতে কে বা কারা হামলা চালায়, এতে পরিষদের পক্ষে আমি মর্মাহত। তিনি হামলাকারিদের গ্রেফতারের জন্য লিখিতভাবে ওসিকে অনুরুধ জানান।

বলা আবশ্যক যে বিশ্বনাথে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পংকি খানকে যখন আওয়ামীলীগের সভাপতি মনোনীত করা হয়, তখন উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী বরাবরে অভিযোগ দায়ের করলে উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি স্থগিত ঘোষনা করা হয়। তখন উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া পংকি খানকে রক্ষার জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় নেতাদের বাসায় বাসায় গিয়ে চেষ্টা তদবির করেছিলেন। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে পংকি খানের স্বার্থ সংশ্লিস্ট বিষয় নিয়ে মত বিরুধ দেখা দেয়ায় অপমান জনক এই ঘটনা ঘটে। সাধারণ আওয়ীলীগের নেতাকর্মীদের জিজ্ঞাসা, বিশ্বনাথ আওয়ামীলীগ এখন কার হাতে।
একজন সাংসদ আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় যোগদান করতে হামলার শিকার হলেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি ওসি সাহেবকে বলেছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *